‘ভুয়া ডাক্তার’ মুনিয়াকে নয়, প্রশ্নগুলো প্রশাসনকে করা প্রয়োজন

বিডি নিউজ ২৪ মো. বায়েজীদ খান প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২৪, ২৩:১৫

গত ২৫ মার্চ রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি টেলিভিশনের প্রচার করা ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভিডিওটি পোস্ট করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। যে মুহূর্তে লেখাটি লিখছি ওই সময় পর্যন্ত ভিডিওটি ওই টেলিভিশনের ফেইসবুক পেইজ থেকেই এক কোটিরও বেশি মানুষ দেখেছেন। এর বাইরে শেয়ার করা অন্য সবগুলো পেইজ ও ব্যক্তিগত প্রোফাইলের হিসেব ধরলে ওই সংখ্যা হয়তো আরও কয়েকগুণ বেশি।


ভিডিওটি প্রথমবার দেখার পর অন্যদের মতো আমিও বিনোদিত হয়েছি এবং নিজের ব্যক্তিগত টাইমলাইনে কৌতুকের ছলে শেয়ার করি। একদিনের মাথায় অবশ্য ভিডিওটি টাইমলাইন থেকে মুছে দেই। কিন্তু কেন? এ প্রশ্নের উত্তর দেবার আগে ঘটনার পেছনের ঘটনায় একটু আলো ফেলতে চাই।


গত বছরের ২০ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ থেকে এক নার্সের মোবাইল চুরি হয়। এ ঘটনায় হাসপাতালে নজরদারি বাড়ানো হয়। ২৩ ডিসেম্বর একজনকে সন্দেহজনকভাবে হাসপাতালে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে গাইনি বিভাগের চিকিৎসক পরিচয় দেন, নাম মুনিয়া আক্তার রোজা। গাইনি বিভাগে নিয়ে গেলে কেউই তাকে চিনতে পারেননি। পরে যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, তার পরিচয়পত্রটি ভুয়া।

ওই সময় জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছিলেন, পরিচয়পত্র ও গায়ে পরিহিত অ্যাপ্রন তিনি নীলক্ষেত থেকে কিনেছেন। আর স্টেথোস্কোপ কিনেছেন মিটফোর্ড থেকে। মূলধারার প্রায় সবগুলো দৈনিক পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলের সামনে তার স্বীকারোক্তি দেয়ার ভিডিও তখন ভাইরাল হয়েছিল।


তিনি ভুয়া ডাক্তার— এটা নিশ্চিত হবার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেন। শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। ওই মামলায় কারাভোগ করে কিছুদিন আগে তিনি মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তি পেয়ে পুনরায় আলোচনায় এসেছেন সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির কারণে।


ভিডিওতে দেখা যায় মুনিয়া সেখানে নিজেকে একজন এমবিবিএস ডাক্তার দাবি করেছেন। উপস্থাপক তাকে কয়েকটি সহজ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছেন। ওটি এবং আইসিইউয়ের পূর্ণরূপ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি তার উত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া পেশেন্টকে ‘ফ্যাশন্ড’; ব্রেন স্ট্রোককে ‘ব্রেন স্টুমার’, প্রেসক্রিপশনকে ‘পিসকিপশন’ বলা এবং উপস্থাপকের সামনে প্রমাণ হিসেবে হাজির করা প্রেসক্রিপশন দেখে ঠিকঠাকভাবে পড়তে না পারার ব্যাপারটাকে নিছক বিনোদন হিসেবেই নিয়েছেন নেটিজেনরা।

অন্যান্য ইস্যুর মতো এটিও দুদিন পরে হারিয়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি কয়েকটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন রেখে যাচ্ছে। যেমন:


১) তিনি কোনো ডাক্তার নন— ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গণমাধ্যমের সামনে গতবছরই স্বীকার করেছেন মুনিয়া এবং কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। ইউটিউবে গেলেই পাওয়া যাবে সেই ক্ষমাপ্রার্থনার ভিডিও। ঢামেক হাসপাতালের করা মামলায় তিনি জেলও খেটেছেন। যেখানে তিনি নিজের অপরাধ নিজেই স্বীকার করেছিলেন, সেই ব্যক্তিকে কারাভোগের পর পুনরায় ক্যামেরার সামনে বসিয়ে আইসিইউ কিংবা ওটির পূর্ণরূপ জানতে চাওয়া কতখানি যৌক্তিক? যৌক্তিক হলে সেটা সাংবাদিকতার কোন নীতিমালায় পড়বে?


২) তর্কের খাতিরে ধরে নিচ্ছি চ্যানেলটি মনে করেছে, মুনিয়ার প্রতি অন্যায় করা হয়েছিল এবং বিনা কারণে কারাবাস দেয়া হয়েছিল। তাই, প্রকৃত সত্যটি তারা দর্শকের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছে। ভিডিওটিতে এমন কোনো প্রকৃত সত্য তারা উদঘাটন করতে পেরেছে কি যা সম্পূর্ণ নতুন ও পূর্বে মানুষ জানত না? যদি কোনো নতুন তথ্য ও রহস্য উদঘাটন করা না যায় তাহলে ভিডিওটি কোন যুক্তিতে প্রকাশ করা হলো?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও