 
                    
                    মা বাবার হক আদায়ে এ রমজানেই সতর্ক হই
রমজানে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে জাহান্নাম থেকে নাজাত বা মুক্তি লাভ করে। আর যে কোনো সন্তানের জন্য অন্যতম ইবাদত হলো বাবা মায়ের খেদমত করা। বাবা মায়ের খেদমতের মাধ্যমে সন্তান জান্নাত লাভ করে। সেই অর্থে রমজান মাতা–পিতার হক আদায়ে বাড়তি জোর দেওয়ারও মাস।
যারা মাতা–পিতার খেদমত না করার কারণে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের অভিসম্পাত করেছেন। হাদিস শরিফে এসেছে, একবার জুমার দিনে রাসুলুল্লাহ (সা.) মিম্বারের প্রথম ধাপে পা রেখে বললেন, ‘আমিন!’ অতঃপর দ্বিতীয় ধাপে পা রেখে বললেন, ‘আমিন!’ তারপর তৃতীয় ধাপে পা রাখলেন এবং বললেন, ‘আমিন!’
 এরপর তিনি খুতবা দিলেন ও নামাজ আদায় করলেন।
নামাজ শেষে সাহাবায়ে কিরাম প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আজ যা দেখলাম, তা এর আগে কখনো দেখিনি; এটা কি কোনো নতুন নিয়ম নাকি?
নবী করিম (সা.) বললেন, না, এটা নতুন কোনো নিয়ম নয়। আমি মিম্বারে ওঠার সময় হজরত জিবরাইল (আ.) আসলেন। আমি যখন মিম্বারের প্রথম ধাপে পা রাখি, তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, যারা মাতা–পিতা উভয়কে বা একজনকে বার্ধক্য অবস্থায় পেয়েও তাঁদের খেদমতের মাধ্যমে জান্নাত অর্জন করতে পারল না, তারা ধ্বংস হোক। তখন আমি সম্মতি জানিয়ে বললাম, আমিন! (তা–ই হোক)। যখন দ্বিতীয় ধাপে পা রাখি, তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, যারা রমজান পেল, কিন্তু ইবাদতের মাধ্যমে তাদের গুনাহ মাফ করাতে পারল না, তারা ধ্বংস হোক। তখন আমি বললাম, আমিন! আমি যখন মিম্বারের তৃতীয় ধাপে পা রাখি, তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, যারা আপনার পবিত্র নাম মোবারক (মুহাম্মদ সা.) শুনল কিন্তু দরুদ শরিফ পাঠ করল না, তারা ধ্বংস হোক। তখন আমি সম্মতি জানিয়ে বললাম, আমিন! (মুসলিম শরিফ)।
সারা দুনিয়াতে মাত্র তিনটি জিনিস এমন আছে, যা শুধু দেখলেই সওয়াব হয়। কাবা শরিফ, কোরআন শরিফ ও মাতা–পিতার চেহারা মোবারক। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যখন কোনো সন্তান স্বীয় মাতা–পিতার প্রতি মহব্বতের নজরে দৃষ্টিপাত করে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি করে কবুল হজের সওয়াব দান করেন। সাহাবিগণ বললেন, যদি দৈনিক একশত বার তাকায়? নবীজি (সা.) বললেন, হ্যাঁ। তাহলেও এক শ কবুল হজের সওয়াব হবে। (বায়হাকি শরিফ)।
যারা মাতা–পিতার খেদমত থেকে বঞ্চিত হলো, তারা আল্লাহ তাআলার রহমত থেকে বঞ্চিত হলো। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমার রব এই ফয়সালা দিয়েছেন যে আল্লাহ ছাড়া কারও ইবাদত করবে না এবং মাতা–পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। তাঁদের কোনো একজন বা উভয়জন যদি বার্ধক্যে উপনীত হন তবে (বিরক্তিতে) তাঁদের উফ্ বা উহ্ শব্দটি বলবে না এবং তাঁদের ধমক দেবে না; বরং তাঁদের সঙ্গে স্নেহসিক্ত কথা বোলো। তাঁদের জন্য দয়ার্দ্রতা ও বিনয়ে হস্ত সম্প্রসারিত করে দাও, আর বোলো, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি তাঁদের প্রতি দয়া করুন, যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাকে প্রতিপালন করেছেন।’ (সুরা-১৭ ইসরা, আয়াত: ২৩-২৪)
- ট্যাগ:
- মতামত
- মা-বাবা
- হক বা অধিকার
- অধিকার আদায়
 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                -68f7ebaa39de2-6903ee942e8e5.jpg)