
বাজারে নিত্যপণ্যের সরকারি দর কেউ মানছে না
রাজধানীর শাহজাহানপুর বাজারে গতকাল শনিবার দুই কেজি আকারের একটি ব্রয়লার মুরগি কেনেন বেসরকারি চাকরিজীবী মিরাজুল ইসলাম। বেশ দর-কষাকষি করে তিনি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমাতে সমর্থ হয়েছেন। দর পড়েছে ২১০ টাকা।
মিরাজুল প্রথম আলোকে বলেন, পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগে তিনি ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে কিনেছিলেন। রোজা এলেই সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়।
সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে উৎপাদন খরচ ১৪৬ টাকা। তারা উৎপাদনকারী, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মুনাফা যোগ করে এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দর নির্ধারণ করে দিয়েছে ১৭৫ টাকা। যদিও ঢাকার চারটি বাজার এবং বিভাগীয় শহরের বাজার ঘুরে গতকাল কোথাও নির্ধারিত দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হতে দেখা যায়নি।
আশা করছি, বাজার নিজে থেকেই সংশোধিত হবে। যদি না হয়, যেখানে যেখানে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বা হস্তক্ষেপ দরকার, ওই সব জায়গায় হস্তক্ষেপ করা হবে।
মো. মাসুদ করিম, মহাপরিচালক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর
শুধু ব্রয়লার মুরগি নয়, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ২৯টি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেই দামে বিক্রির জন্য উৎপাদনকারী, পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতাদের অনুরোধ করেছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্ধারিত দর মানতে দেখা যায়নি।
নির্ধারিত দর না মানলে জরিমানাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের। সংস্থাটির মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কৃষি বিপণন অধিদপ্তর যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই বিষয় আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। অভিযান চলছে। কিন্তু আমাদের কাছে সব প্রত্যাশা করলে তা করতে পারব না। আমাদের তো সীমাবদ্ধতা আছে।’
রোজায় এবার বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। আগে থেকেই অনেক পণ্যের দাম বেশি ছিল। ফলে মানুষের ব্যয় অনেকটাই বাড়তি। সরকারও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলছে। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। এমন পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর গত শুক্রবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়।