বিভক্ত জাপা, দেবরকে ‘চাপে’ রাখতে ভাবির সম্মেলন
জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। সম্প্রতি তিনি নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন। কয়েকবার বিভক্ত হওয়া জাতীয় পার্টির সম্মেলনও করতে যাচ্ছেন তিনি। রওশন এরশাদ নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করলেও জিএম কাদেরকে দল থেকে অব্যাহতি দেননি। আবার নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। ফলে দলীয় অবস্থান থেকে রওশন এরশাদ সম্মেলন করতে পারেন না বলে দাবি জিএম কাদেরপন্থি নেতাদের। মূলত জিএম কাদেরকে চাপে রাখতেই এই সম্মেলনের আয়োজন বলে জানান তারা।
অন্যদিকে রওশন এরশাদের সঙ্গে রয়েছেন জিএম কাদেরের কাছ থেকে অব্যাহতি পাওয়া একাধিক হেভিওয়েট নেতা। আগামী ৯ মার্চ রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এ অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে নতুন করে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হবে। এতে জিএম কাদেরের ক্ষমতা কমবে বলে মনে করছেন রওশনপন্থিরা। সম্মেলনে চমক আসার কথাও বলছেন কেউ কেউ।
তবে জিএম কাদেরপন্থিদের দাবি, এই সম্মেলন হালে পানি পাবে না। আবার সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দূরে সরে গেছেন রওশন এরশাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতা।
সম্মেলন আয়োজনের সঙ্গে জড়িত নেতারা বলছেন, জাপার দশম জাতীয় সম্মেলন করতে জোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রাজধানীতে সাঁটানো হচ্ছে পোস্টার। সারাদেশ থেকে তাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ওইদিন ঢাকায় আসবেন। সম্মেলনের পর তারা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) কার্যবিবরণী জমা দেবেন।
রওশনপন্থি অংশের মুখপাত্র সুনীল শুভ রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘সম্মেলন ভালো হবে। সারাদেশ থেকে কয়েক হাজার কাউন্সিলর থাকবেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গঠিত হবে। আমরা ইসিকে জানিয়ে দিয়েছি, রওশন এরশাদ আমাদের নেতা। এটা নিয়ে কোনো সংশয় নেই।’
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে দলে তার প্রথম স্ত্রী রওশন এরশাদ এবং ভাই জিএম কাদেরের বিরোধ ও টানাপোড়েন চলে আসছে। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে এ বিরোধ আরও প্রকট হয়। নির্বাচনে অংশ নেননি রওশন ও তার ছেলে শাদ এরশাদ। সমঝোতায় ২৬টি আসন পেয়েও নির্বাচনে জাপার ভরাডুবি হয়। এর জেরে গত ২৮ জানুয়ারি রওশন নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তিনি জাপার চেয়ারম্যান পদ থেকে জিএম কাদের ও মহাসচিব পদ থেকে মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেন। এর আগেও রওশন নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছিলেন।