অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে অনুপস্থিত নারীর অবদান

বণিক বার্তা অধ্যাপক আব্দুল বায়েস প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০২৪, ১৪:১৪

অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক অবৈতনিক কার্যাবলি এবং ব্যক্তি, তাদের পরিবার এবং সমাজের কল্যাণে অবদান রাখার একটি অপরিহার্য উপাদান। (স্টিগলিৎজ ২০০৭). বাংলাদেশে কিংবা অন্য কোথাও বিনা পারিশ্রমিকে কাজের তিনটি খাত হচ্ছে: (ক) খানা ও পরিবারের সদস্যদের জন্য ঘরের সেবা; (খ) খানা ও পরিবারের সদস্যদের জন্য পরিচর্যা সেবা এবং (গ) নিজ ভোগের জন্য বিনা মজুরিতে উৎপাদনশীল কর্মকাণ্ড। বাংলাদেশের জিডিপির হিসাবে (ক) এবং (খ) অনুপস্থিত থাকে। তবে ইদানীং (গ) আমলে নেয়া হচ্ছে। প্রথমোক্ত দুই কাজে মূলত নারী জড়িত অথচ তার কাজ বাজারে বিনিময় হয় না বলে জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হয় না। সেজন্যই বোধ হয় নারীর অবদানের অবমূল্যায়ন ঘটছে এবং বিতর্কের সূত্রপাত সেখানেই। 


অতিসম্প্রতি একটা উল্লেখযোগ্য এবং প্রশংসনীয় গবেষণা সম্পাদন করেছেন কয়েকজন গবেষক—বিনায়ক সেন, কাজি ইকবাল, মোহাম্মদ ইউনুস এবং তানিমা আহমেদ। তারা তাদের গবেষণালব্ধ ফলাফল উপস্থাপন করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত এক কনফারেন্সে। গবেষণার বিষয়টি বহুল আলোচিত-সমালোচিত এবং প্রত্যাশিত তবে কেন জানি সমাজ বিজ্ঞানীরা গুরুত্বপূর্ণ এ কাজে হাত দেননি। কঠিন এ কাজটি হলো গৃহস্থালি বিভিন্ন কাজের, যেমন রান্নাবান্না, শিশু পরিচর্যা এবং অন্যান্য সেবামূলক কর্মকাণ্ড যার বিপরীতে নারীর জন্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা নেই (আনপেইড) সেসব কর্মকাণ্ডের টাকার অংকে মূল্য নির্ধারণ করা। অধুনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও নারীর অবমূল্যায়িত এবং অপরিশোধিত (আনপেইড) কাজ মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পথ বের করার নির্দেশ দান করেছেন বলে আমরা জানতে পারি। 


দুই.


বাজার-বহির্ভূত (নন-মার্কেট) বেতন বা মজুরিবিহীন পরিচর্যার কাজকে বাংলায় বলে গৃহস্থালির কাজ বা ঘরের কাজ। একেবারে সাদা চোখে তেমন কিছু মনে না হলেও গভীর অন্তর্দৃষ্টিতে এরা সামাজিক পুনরুৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা এবং অমর্ত্য সেনের ভাষায়, ব্যক্তি, পরিবার এবং সার্বিক সমাজ সমৃদ্ধিশালী হওয়ার জন্য সামর্থ্য করার প্রক্রিয়া। ক্লডিয়া গোল্ডিন বলছেন, অর্থনৈতিক অংশগ্রহণে নারী-পুরুষের মধ্যকার মহান সমকেন্দ্রিকতা হতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত গৃহস্থালির মজুরিবিহীন কাজের কারণীভূত (ইন্সট্রুমেনটাল) ভূমিকাকে আমলে নেয়া না হবে। মনে রাখা দরকার যে খানা বা সমাজ স্তরে পরিশোধিত/বেতনভুক্ত কাজে এরাই জ্বালানি জোগায় বা সামর্থ্য করে তোলে। দুর্ভাগ্যবশত এমন গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অপরিশোধিত পরিচর্যামূলক কিংবা খানার কাজ অবমূল্যায়ন করা হয় মূলত এ কারণে যে বাজার-তাড়িত বিনিময়ের বাইরে এরা সংগঠিত হয় যাকে ‘হারানো বাজার’ (মিসিং মার্কেট) হিসেবে চিহ্নিত করা চলে। এ-সংক্রান্ত সব অধ্যয়নে এ কাজগুলো বাজার-বহির্ভূত (নন-মার্কেট) কর্মকাণ্ড হিসেবে পরিচিত। 


তিন.


খানার এবং পরিচর্যা জগতে বিচরণ করা বাজার-বহির্ভূত অপরিশোধিত পদক্ষেপগুলোকে পরিষ্কার অর্থেই ‘কাজ’ বলে শনাক্ত করা যায় কিন্তু একে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রে ভিন্ন মত রয়েছে। মার্গারেট রিড মনে করেন, কাজ হচ্ছে এমন সক্রিয়তা বা কর্মপরায়ণতা যা একজন লোক অন্যজনকে দিয়ে সম্পন্ন করাতে আর্থিক মূল্য দিতে প্রস্তুত। স্মরণ রাখা দরকার যে আলোচিত গবেষকরা তাদের গবেষণা কর্মে এ সংজ্ঞাকেই বেছে নিয়েছেন। এটাকে বলে ‘তৃতীয় ব্যক্তি মানদণ্ড’, যেখানে অনেক মজুরিবিহীন কাজ (যেমন শিশু পরিচর্যা) কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে যদি কারো পরিবর্তে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি ভাড়ায় কাজটি করতে সম্মত থাকেন। অন্যদিকে অন্য একটা মানদণ্ড হলো কাজটি হস্তান্তরযোগ্য লাভ সৃষ্টি করে কিনা এবং উল্লিখিত দুটো মানদণ্ডেই পরিচর্যায় মজুরিবিহীন সময় বরাদ্দ কাজ হিসেবে গণ্য হওয়ার দাবি করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও