দাপ্তরিক চিঠি এত জটিল
দিনভর শুভেচ্ছা। ফোনে হোয়াটসঅ্যাপে ফেসবুকে ভাষা দিবসের নিরন্তর শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে গত দুদিনে। এসব শুভেচ্ছার মধ্যেই কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, সারা বছর নিজের ভাষাটিকে গুরুত্ব দিই তো? কারও অনুযোগ, নিজেকে বড্ড অবহেলা করছি আমরা। কারও সদর্পে ঘোষণা, বাঙালি নিজের ভাষার জন্য গর্ব করতে জানে।
একেকজন একেকভাবে নিজের আবেগ প্রকাশ করলেও দিন শেষে প্রশ্ন জাগে, আমরা ঠিক জায়গায় আছি তো? বাংলা ভাষা নিয়ে অশেষ গর্ব থাকলেও ভেতরে হা-হুতাশটাও কম না। ভাষার শুদ্ধ চর্চায় আমরা আজও অপারগ। সরকারেও গুরুত্ব নেই। কর্তাদের কক্ষে অক্সফোর্ড ডিকশনারির পাশে যদিও ঠিকই শোভা পায় বাংলা একাডেমির অভিধান। কিন্তু ওটা ওই পর্যন্তই। এর কোনো প্রয়োগ নেই।
কেমন হয় সরকারি চিঠিপত্রের ভাষা? এর সহজ-সরল জবাব হচ্ছে সরকারি অফিস আদেশের বা প্রজ্ঞাপনের ভাষা পড়তে গিয়ে হোঁচট খেতে হয়। জনসাধারণের সঙ্গে সম্পর্কিত সরকারের জারি করা নোটিসে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ আদেশ মেনে কর্মকর্তারা বাংলা ভাষায়ই চিঠিপত্র করছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এসব জায়গায় যে বাংলা ভাষা প্রয়োগ করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের কাছে তা বোধগম্য নয়। সাধু ও চলতি ভাষার মিশ্রণে লেখা এসব সরকারি কাগজের ভাষা জটিল ও দুর্বোধ্য। কর্মকর্তাদের ভাষাটা স্বাচ্ছন্দ্যে পড়া যায় কি না, সে সম্পর্কে তারা সচেতন নন। তাদের লেখায় জীবন-ঘনিষ্ঠ শব্দ চয়ন হয় না। দুর্বোধ্যতার সঙ্গে সঙ্গে লেখাগুলো হয়ে যায় শুকনো ও নিরস। এক কথায় বাংলার ব্যবহারটা জগাখিচুড়ি ধরনের। ফলে কেউ কেউ এসব নোটিস, আদেশ ও প্রজ্ঞাপনে ব্যবহৃত ভাষার ভুলও বোঝেন। এতে তাদের পেশাগত বা ব্যক্তিগত জীবনে অপরিসীম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- চিঠি
- কঠিন
- ভাষা
- দাপ্তরিক কাজ