বিএনপি নির্বাচনে গেলে কী হতে পারত

সমকাল হাসান মামুন প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪২

গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মান নিয়ে যত প্রশ্নই থাকুক– সরকার গঠনে কোনো সমস্যা হয়নি। আন্তর্জাতিক পরিসরেও সরকারকে এজন্য কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। অনেকে তো বলেন, ওটা কোনো ‘ইলেকশন’ই হয়নি; হয়েছে ‘সিলেকশন’! সতর্ক মূল্যায়নকারীরা বলছেন, দুই-তৃতীয়াংশ আসনে ‘সাজানো প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ও হয়নি। ভোটের প্রদর্শিত হার নিয়েও অবিশ্বাস থেকে যাবে। সব মিলিয়ে নির্বাচনটি নৈতিক ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। তবে এর চাইতে খারাপ নির্বাচনের ভেতর দিয়েও দেশ চালিয়ে যেতে সমস্যা হয়নি নিকট অতীতে। এবারও হবে বলে মনে হচ্ছে না।


নির্বাচনের আগে থেকে ঘনিয়ে ওঠা অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা কঠিন হবে অবশ্য। সেটা ঘিরে সরকার বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়বে, তেমনটা নাও হতে পারে। এটা কিছুটা হতো– দেশের প্রধান রপ্তানি খাত গার্মেন্টসে মূল আমদানিকারক দেশগুলো থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এলে। নির্বাচনের আগেই এ নিয়ে শংকা তৈরি হলেও, নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরও তেমনটি ঘটতে দেখা যায়নি। শ্রমবিষয়ক অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়নি অবশ্য। মনে হয়, পশ্চিমারা চাপ বহাল রেখে এ খাতে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করিয়ে নেওয়ার পথে এগোবে। রপ্তানি আয়ের গতি-প্রকৃতি নিয়ে দুর্ভাবনায় থাকা নীতিনির্ধারকদের জন্য এটা হবে স্বস্তির। রিজার্ভ সংকটও কিছুটা কাটিয়ে ওঠা যাবে গার্মেন্টস খাত ভালোভাবে এগিয়ে যেতে পারলে। কারণ রেমিট্যান্সের ওপর ভরসা কম। বিপুল প্রবাসী আয় এখনও আসছে হুন্ডিতে। এফডিআইসহ ঋণ সহায়তা ছাড় পরিস্থিতিও এখন পর্যন্ত খারাপ।


অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন ঘিরে যে নিষেধাজ্ঞার কথা হচ্ছিল, তা না আসায় অবশ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে দেশে। এ ক্ষেত্রে বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রশ্নে তার মিত্র ইইউও কম আগ্রহ দেখায়নি। তাদের পার্লামেন্ট থেকে কোনো কোনো ইস্যুতে ‘অ্যাক্টিভিজম’ও (অনেকের মতে) হয়েছিল পরিলক্ষিত। একপক্ষীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর থেকে তাদেরও নিশ্চুপ হয়ে যেতে দেখা গেল। ক্ষমতায় আসা-যাওয়া করা তিন রাজনৈতিক দলের মধ্যে ‘নিঃশর্ত সংলাপ’ আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের তৎপরতা ছিল তাদের দৃশ্যমান সর্বশেষ প্রয়াস। তবে সরকার তার পথেই এগিয়েছে এবং নির্বাচন সেরেছে বলিষ্ঠভাবে। জাতীয় সংসদও শুরু করেছে কার্যক্রম এবং তাতে একটা ‘বিরোধী দল’ও বের করা গেছে। ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই এবার ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। তারাও পারত একটি গ্রুপ বানিয়ে বিরোধী দলের জায়গাটা নিতে। সেটা না হলেও যা হয়েছে– তাতেও গণতন্ত্র চর্চা হবে না।


এ প্রক্রিয়ার সূচনা অবশ্য হয়েছে ২০১৪ নির্বাচনের ভেতর দিয়েই। পরবর্তী দুই নির্বাচনে এটা আরও জোরদার হলো। এমন ধারণাও জোরদার যে, আগামী নির্বাচনও এ ধারাতেই হবে। ‘এ ধারাতেই’ মানে, ক্ষমতাসীন দল ও তার মিত্ররা নির্বাচনে এসে জনগণকে বলবে ভোটকেন্দ্রে যেতে। ভবিষ্যতে ভোটদানকে হয়তো বাধ্যতামূলকও করা হবে। তার কিছু আলামত এবারের নির্বাচনেও দেখা গেল। জাল ভোটসহ গতানুগতিক ত্রুটিগুলোও ছিল নির্বাচনে। দেশের মানুষ এতে কী মনে করল, তাতে অবশ্য কিছু যায় আসে না।  সব প্রস্তুতি দেখে নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা কিন্তু সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও প্রকাশ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মতো দেশের সরকারকে সরিয়ে দিতে পারে, এমনটাও বলা হয় একাধিকবার। তবে পরিস্থিতি বোধহয় সে রকম ছিল না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও