গ্যাস সংকটে বাধাগ্রস্ত সার উৎপাদন
গ্যাস সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে দেশের সার উৎপাদন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) আওতাভুক্ত কারখানাসহ চট্টগ্রামের ৩টি কারখানা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এসব কারখানা পুরোদমে চালু হতে আরও সময় লাগবে। ফলে বোরো মৌসুমের আগে এ ধরনের পরিস্থিতির কারণে সার সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, দেশে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয় বোরো মৌসুমে। বোরো রোপণ এবং পরবর্তী সময়ে সার দরকার হয়। এ সময় সারের উৎপাদন ব্যাহত হলে দেশের জন্য শঙ্কার কারণ। তবে শিল্পমন্ত্রী বলছেন, সারের কোনো সংকট হবে না।
জানতে চাইলে কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জাহাঙ্গীর আলম যুগান্তরকে বলেন, বোরো মৌসুম সামনে রেখে উৎপাদন ব্যাহত হলে সারের সরবরাহ কমবে। এতে পণ্যটির দাম বাড়বে। সামগ্রিকভাবে বোরো উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, এমনিতেই আমরা সারের জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম বাড়ছে। এ অবস্থায় বিকল্প ছিল দেশে উৎপাদন বাড়ানো। সেখানে গ্যাস সংকটের কারণে কারখানা বন্ধ থাকছে। কমছে উৎপাদন। এটি আমাদের জন্য বড় শঙ্কার কারণ। ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আগে ৮০ শতাংশ সার দেশে উৎপাদন হতো। বর্তমানে সেটি ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। ঘোড়াশাল পলাশ কারখানা চালু হওয়ার পরও সব কারখানা মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১২ লাখ টন সার দেশে উৎপাদন করা সম্ভব। অর্থাৎ বিভিন্ন কারণে আমরা আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছি। এক্ষেত্রে অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, আমদানি করা সার নির্ধারিত সময়ে কৃষকের কাছে পৌঁছানো যায় না। এছাড়াও এসব সার কিনতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে কৃষককে ২ থেকে ৩ টাকা বেশি গুনতে হয়। এরপর নতুন সংকট সৃষ্টি হলে সমস্যা আরও বাড়বে। ফলে অন্যান্য জায়গায় কম দিয়ে হলেও সার কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা উচিত।
তবে সার সংকট মানতে রাজি নন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। শনিবার তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সার নিয়ে বর্তমানে কোনো সমস্যা নেই। আগামী বছর থেকে বাংলাদেশ সার রপ্তানিতে যাবে। দেশে প্রতিদিন ২৮শ টন সার উৎপাদন হচ্ছে। ফলে আগামী মৌসুমে সারের কোনো সংকট হবে না। মন্ত্রী বলেন চলমান সংকটের সময়ে বাসা-বাড়ির তুলনায় শিল্পকলকারখানায় গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।