নির্বাচনী ফল এবং ফলাফল

দেশ রূপান্তর রাজেকুজ্জামান রতন প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১৩

ক্ষমতাসীন সরকারের দমন-পীড়ন, বিরোধীদের আন্দোলন, বিদেশিদের কাছে দৌড়ঝাঁপ, বিদেশি রাষ্ট্রের সমর্থন এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আশঙ্কা আর কী হবে, কী হতে যাচ্ছে এ ধরনের সংশয়ের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে, সরকার গঠন হয়েছে, কিন্তু বিতর্ক থামেনি। যদিও বিষয়টা একটু পুরনো, তবু বলি নির্বাচন কমিশন কর্র্তৃক প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, ৩০০ আসনের মধ্যে ২২৩টি আসন পেয়েছেন নৌকা মার্কা নিয়ে  আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীরা। ১৪ দলের সমন্বয়ে গঠিত সরকারদলীয় জোটের দুই দল ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ পেয়েছে ১টি করে আসন, তাদেরও মার্কা ছিল নৌকা। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র এবং ডামি প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন ৬২ আসনে। ক্ষমতাসীন দল তাদের দীর্ঘদিনের আন্তরিক বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসনে ছাড় দিয়েছিল, কিন্তু সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে আওয়ামী লীগের নেতারাই। ফলে জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। কল্যাণ পার্টি ১টি ও বাকি ১টি আসনে নির্বাচন স্থগিত আছে। এই হলো ২৯৯ আসনের নির্বাচনী ফল। 


এই হিসাব এবং আসন প্রাপ্তির চিত্র থেকে এ কথা পরিষ্কারভাবেই বলা যায় যে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দলগুলোর সবাই সরকারি দল ও তাদের অনুগ্রহ প্রাপ্ত দল। বিজয়ী স্বতন্ত্র ৬২ প্রার্থীর প্রত্যেকেই সরকারি দলের সদস্য। যদিও আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধারা অনুযায়ী দলের বিরুদ্ধে নির্বাচন করলে সদস্যপদ বাতিল হওয়ার কথা, কিন্তু গঠনতন্ত্রে লেখা থাকলেও তার প্রয়োগ হবে কিনা তা নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়, এটা হবে না। ধরুন, যদি দলের সিদ্ধান্ত হয় স্বতন্ত্রদের আলাদা জোট করতে হবে,  তারপরও স্বতন্ত্র হিসেবে বিজয়ীদের অনেকেই দলের বাইরে পরিচিত হতে চাইবেন না। তাদের আশঙ্কা, এতে তাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতি পরিচয়হীনতার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। 


এখন যে প্রশ্নটি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে, তা হলো এবার সরকার অনুমোদিত বিরোধী দল কারা হবে? প্রতিবার একই ধরন তো কারোই ভালো লাগে না। তাই ধারণা করা হচ্ছে, গতবারের মতো নাও হতে পারে। এবার অভিনব কিছু দেখা যেতে পারে। যদি জাতীয় পার্টি গতবারের মতো বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় (এবার অবশ্য তাদের ১১টি আসন দেওয়া হয়েছে), তাহলে স্বতন্ত্র (৬২+১) সংসদে কী ভূমিকা পালন করবে? নির্বাচনে ভোট দেন ভোটাররা, কিন্তু অংশগ্রহণ করে রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীরা। তাই শুধু ভোটার উপস্থিতি দিয়ে নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়েছে এ কথা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয় না। এবারের নির্বাচনে সেই প্রশ্ন তো আছেই আবার ভোট পড়ার হার নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। ২৮ না ৪১.৮  শতাংশ এই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে খোদ নির্বাচন কমিশন নিজেই। তবে দেশি-বিদেশি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এই নির্বাচনে খুব কম ভোটারের উপস্থিতির কথা বলেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক প্রশ্ন ও প্রবণতার জন্ম দিয়ে গেল এই নির্বাচন। আওয়ামী লীগের মতো বড় ও প্রাচীন দলে এই নির্বাচন নিয়ে যেভাবে ভূমিকা পালন করেছে, দলের মধ্যে বিকল্প বা ডামি প্রার্থী দাঁড় করিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিয়েছে, যার ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পর কর্মীদের মধ্যে যে বিভক্তি দেখা গেছে তাতে দলের মধ্যে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। জাতীয় পার্টির সক্ষমতা ও অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে।  দলটির সাংগঠনিক শক্তি ক্রমে ক্ষয়িষ্ণু আর ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়ে অস্তিত্ব বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যারা জোটবদ্ধ তাদের সবার অবস্থাই এ রকম হয়ে পড়েছে। ফলে সরকারে থেকে যেমন বিতর্ক জন্ম দিচ্ছে, সঙ্গীরা ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়েছে, অর্থনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে আর দমন-পীড়ন বাড়িয়ে তোলায় সরকারের পক্ষে পুলিশ ও প্রশাসননির্ভর হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও