কেবল মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো কঠিন

সমকাল ড. আবু আহমেদ প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:৪১

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনশীল মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক যুগের বেশি সময় পরে এ ধরনের মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে। এর আগে যেসব মুদ্রানীতি নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি ছিল। প্রয়োজনের ভিত্তিতে এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এসব পদক্ষেপের পেছনে উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নেওয়া। এবারের মুদ্রানীতির উদ্দেশ্য– মূল্যস্ফীতি কমানো। এর আগেও বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষণা দিয়েছিল। বর্তমানে তাদের অর্থনৈতিক নীতির মূল উদ্দেশ্য মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা। এবারে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এ উদ্যোগ নিয়েছে। এবার নীতি সুদহার দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে বাজারে সুদের হার বেড়ে যাবে। 


বাস্তবে গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বাড়াচ্ছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি সে তুলনায় কমছে না, বরং বেড়েই যাচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি থামানো সম্ভব কি? 


অতীতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কেবল মনিটারি এক্সপানশন বা মুদ্রাবিস্তার হার নির্ধারণের মধ্য দিয়ে মূল্যস্ফীতি থামানো সম্ভব হয়নি। মুদ্রাবিস্তার হার নির্ধারণ মানে ঋণের কতটুকু সরকারি খাতে এবং কতটুকু বেসরকারি খাতে যাবে, তা বেঁধে দেওয়া। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান কিংবা ধনী দেশগুলোর ক্ষেত্রে এ আর্থিক পরিসর বিস্তৃতির মধ্য দিয়ে মূল্যস্ফীতি হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। এটা সেসব দেশের জন্য ঠিক আছে। বাংলাদেশও সেই পথে হেঁটেছে, কিন্তু মূল্যস্ফীতি কমেছে বলে লক্ষ্য করা যায়নি। এটার মূল কারণ হলো বাংলাদেশের সমস্যাগুলো আসছে সরবরাহ খাতগুলো থেকে। সরবরাহ যদি কমে যায়, তাহলে মূল্যস্ফীতি দেখা দেবেই। আমদানি পণ্যের দাম বাড়লেও মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে। এ ছাড়া দেশের হর্তাকর্তা ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ হয়ে দেশের বাজারগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এবং নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। এভাবে কিছু সিন্ডিকেট বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করে। এতে পুরো বাজার ব্যবস্থা সংকটের মধ্যে পড়ে। এ কারণে কেবল মুদ্রানীতি দিয়ে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। 


অর্থনৈতিক নীতিতে এ ধরনের সংকট রেখে মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করলে দেশের অর্থনীতি বদলাবে না। অর্থনীতি স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে গেলে তখনই মুদ্রানীতি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের অর্থনীতি সার্বিক চিত্র থেকে বলা যায়, এখানে মুদ্রানীতি প্রয়োগ করে খুব লাভ হবে না। তাই পূর্ণ নিয়োজিত অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি রোধ করতে মুদ্রানীতি প্রভাব রাখতে পারে। বাংলাদেশের মতো দেশে মৌসুমভিত্তিক সরবরাহ পণ্য ও আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে মুদ্রানীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 


এখানে আরেকটা কথা বলা ভালো, সেটা অবশ্য  মুদ্রনীতিতে এসেছে; এক্সচেঞ্জ রেট তথা মুদ্রাবিনিময় হার। গত এক বছরে বাংলাদেশি টাকা প্রায় ৩০ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে। অনেক অর্থনীতিবিদ সেটা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। বাংলাদেশ ডলারের বিপরীতে অনেক দিন ধরে ভাসমান মুদ্রাবিনিময় হার অনুসরণ করে আসছে। মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, যেসব মুদ্রা ব্যবহার করে আমাদের দেনাপাওনা মেটানো হয়, সেগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে কতটা ওঠানামা করছে, তা দেখা হবে। অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন হার থাকবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও