কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

নতুন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ অর্থনৈতিক সংকট প্রশমন

বণিক বার্তা ড. আর এম দেবনাথ প্রকাশিত: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৩৯

এখন নির্বাচন-পরবর্তী সময়। নতুন সরকারের সামনে অনেক অবশ্য করণীয় কাজ। সাধারণত নতুন সরকার গুছিয়ে নেয়ার জন্য অন্তত মাস ছয়েক সময় পায়। এবার এ সুযোগ নেই। কাগজে-কলমে নতুন সরকার হলেও বস্তুত এটি পূর্বতম সরকারের নতুন রূপ। নতুন রূপ কিন্তু কাজ সব পুরনো, জমে থাকা কাজ—যেসব কাজ একেবারে হাত পুড়িয়ে দিচ্ছে। যেমন মূল্যস্ফীতি (ইনফ্লেশন) যার কথা আওয়ামী লীগ তার দলীয় ইশতেহারে প্রথম দিনেই স্থান দিয়েছে। বলেছে: ‘‌দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।’ ইশতেহারে দেখা যাচ্ছে তাদের মোট ১১টি হচ্ছে বিশেষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কাজ। এর মধ্যে মূল্যস্ফীতি রোধ এক নম্বরে এবং তা যথাযথভাবেই। বাকি ১০টি ক্ষেত্র যে সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তা কেউ অস্বীকার করবে না। বস্তুত এগুলো বেশ বহুল চর্বিত বিষয়। এসব সাধারণভাবে বর্ণিত হয়েছে। ভালো লেগেছে আমার একটি। কৃষিতে আওয়ামী লীগ লাভজনক করতে চায়। এটি ‘‌ওভারডিউ ইস্যু’। কৃষির এত অবদান সত্ত্বেও যুগ যুগ ধরে এটি অবহেলিত ও লোকসানি খাত। সরকারের কথা শুনে উৎপাদন করলে, উৎপাদন বাড়ালে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। যেমন এবারই পাটে ও ধানে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সব জিনিসের দাম ৫০, ১০০, ২০০ গুণ বাড়লেও কৃষিপণ্যের দাম সেভাবে বাড়েনি। এমন লোকসানি কারবার যে কৃষকরা করে আমাদের অন্ন জোগাচ্ছেন তা আমাদের সৌভাগ্যই বটে। শত হোক লোকসানের কারবার কে বছরের পর বছর করে। এ অবস্থায় সব অগ্রাধিকারের মধ্যে এটি আমার খুব ভালো লেগেছে।


দেখা যাক নতুন সরকার এক্ষেত্রে কী করে। এক্ষেত্রে কেন, বহু ক্ষেত্রেই জরুরি পদক্ষেপ সময়ের দাবি। যেমন মূল্যস্ফীতির সঙ্গেই জড়িত দুটো বিষয়। ডলারের মূল্য স্থির করা এক নম্বর। এটা বাজারভিত্তিক কীভাবে করা হবে অথচ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে এটি চিন্তার বিষয়। কারণ আমরা আমদানিনির্ভর দেশ। দ্বিতীয়ত, ডলারের স্থিতি (রিজার্ভ) কীভাবে বাড়ানো হবে। এর সঙ্গে জড়িত দুটো বিষয়। রফতানি ও রেমিট্যান্স। রফতানি বাজার নানা সমস্যায় জড়িত। বাজার সীমিত আমেরিকা ও ইউরোপে, তাও শুধু তৈরি পোশাক। রফতানি বৈচিত্র্যহীন। রেমিট্যান্সের বাজার মন্দা, হুন্ডি রেমিট্যান্সকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসব সমস্যার সমাধান কীভাবে হবে তা চিন্তা করতে করতেই আসবে আরো অনেক জমানো সমস্যা। যেমন আর্থিক খাত সংস্কার, দেশী-বিদেশী ঋণ, ঋণের ওপর সুদ, রাজস্ব বৃদ্ধি, রাজস্ব ব্যয় সংকোচন, মেগা প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ। ঋণ খেলাপ, অর্থ পাচার, ঘুস-দুর্নীতি, বৈষম্য, শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি, ব্যাংকের তারল্য ও আমানত বৃদ্ধি। এসব সমস্যার লেজে লেজে রয়েছে আরো অনেক জরুরি সমস্যা। বস্তুত জরুরি সব সমস্যা এখন বহুল আলোচিত—সরকার তা জানে, দেশবাসী জানে, অর্থনীতিবিদরাও জানে। জানে সবাই ‘‌সিন্ডিকেট’ সমস্যার কথা। প্রয়োজন শুধু জরুরি পদক্ষেপ। নির্বাচনী বছরের কারণে অনেক পদক্ষেপ সময়োচিত ছিল না বলে অনেকের মত। হতে পারে তা। কিন্তু সে ঝামেলা গেছে। এখন দরকার ‘অ্যাকশন’, চোখ বুজে অ্যাকশন। এখানেই আমার বক্তব্য আরো একটু এগিয়ে। আমি আওয়ামী লীগ চিহ্নিত সমস্যা অথবা অর্থনীতিবিদদের চিহ্নিত সমস্যার সঙ্গে দ্বিমত পোষণের কোনো কারণ দেখি না। তবে এসব সমস্যা সমাধানের পথ ও কৌশল সম্পর্কে আমার কিছু বক্তব্য আছে। কেউ কেউ বলতে পারেন একে ‘‌উন্নয়ন দর্শন’। যে যেভাবেই বলুন না কেন আমাদের চিন্তাচেতনার কিছু পরিবর্তন দরকার। সামগ্রিকভাবে সমস্যা সমাধানে আমাদের এখন অনেক বিষয় পুনর্বিবেচনা করা দরকার। ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করা দরকার বস্তুনিষ্ঠভাবে। উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সমাজ পরিবর্তন, সংস্কৃতি ইত্যাদির গতিপ্রকৃতিও পর্যালোচনা করা দরকার। এসব ক্ষেত্রে প্রধান বার্তা চিহ্নিত করা দরকার।


আমার মতে, আমাদের বড় সমস্যা দ্বিচারিতা। আমরা সমাজতন্ত্রের পথ ছেড়েছি। নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতির পথও ছেড়েছি। সে পথ ধরেই বাজার অর্থনীতি (মার্কেট ইকোনমি)। খোলা বাজারি পথ। বিশ্বায়ন, উদার বাণিজ্য নাকি আমাদের ঘোষিত দর্শন বা নীতি। কিন্তু বাস্তবে অবস্থা কী? আমরা কি সত্যি সত্যি বাজার অর্থনীতি অনুসরণ করছি। আমরা কী ‌কল্যাণমুখী বাজার অর্থনীতির পথে আছি? বাজার অর্থনীতি বলে প্রতিযোগিতার কথা, দক্ষতার কথা, গুণের কথা ও উদ্যোগের কথা। আমরা কি গত ১৫ বছর এ গতি অনুসরণ করে চলেছি। অভিজ্ঞতার আলোকে বলা চলে—না, আমরা ওই পথে চলিনি। এটা একটা বড় বিচ্যুতি, যার কারণে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে ও হচ্ছে। আমরা যে অর্থনীতি, বাণিজ্য নীতি ও রাজস্ব নীতি অনুসরণ করেছি তাকে বলা যায় ‘‌সিন্ডিকেটীয়ও অর্থনীতি’ বা ‘‌ক্রোনি ক্যাপিটালিস্ট পথ’। পৃথিবীর অনেক দেশই এ পথ অনুসরণ করে। আমরা সে পথে চলেছি এতদিন। যুক্তি দিয়ে আমাদের বলা হয়েছে ‘‌বাঙালির ক্যাপিট্যাল’ ছিল না বা নেই। তাকে ক্যাপিটাল গড়ার সুযোগ দিতে হবে। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও