ইসরাইলের অবিশ্বাস্য গোয়েন্দা তৎপরতা

যুগান্তর প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৩০

২৫ ডিসেম্বর ইসরাইল এক বিমান হামলায় দামেস্কের শহরতলি জেইনাবিয়াহ জেলায় ইরান রেভুল্যশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) শীর্ষ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইয়েদ রাজী মুসাভীকে হত্যা করে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুসাভী সিরিয়ায় ইরানের শীর্ষ কমান্ডার হিসাবে কাজ করছিলেন। তিনি মূলত সিরিয়া ও ইরানের মধ্যকার সামরিক জোটের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতেন। এ সামরিক জোটটি ইরানের মিত্র ও আঞ্চলিক নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ নামে পরিচিত। মুসাভী ওই অঞ্চলে মিত্র শক্তিগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি আইআরজিসির সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও পুরোনো কমান্ডারদের একজন ছিলেন। ওই এলাকায় আশির দশক থেকে তিনি কাজ করে আসছিলেন। ইরান ও ইরাক থেকে সিরিয়া এবং সেখান থেকে লেবাননে হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্রের চালান পৌঁছানোর নেটওয়ার্কে মুসাভী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছিলেন। মুসাভী রেভুল্যুশনারি সাবেক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমিনির অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর হিসাবে পরিচিত ছিলেন। এর আগে বেশ কয়েকবার মুসাভীকে হত্যার চেষ্টা করেছিল ইসরাইল। এবার তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। এ সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। মুসাভী হত্যার পর ইসরাইলের আশঙ্কা ছিল প্রতিশোধ নিতে সিরিয়া ও লেবানন থেকে ইসরাইল ভূখণ্ডে রকেট নিক্ষেপ করা হতে পারে। কিন্তু প্রায় দুসপ্তাহ হয়ে গেলেও ইরান ওই ধরনের কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।


যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল, ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখার জন্য সিরিয়ার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে বছরের পর বছর ধরে বোমা হামলা চালিয়ে আসছে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সমর্থন দিয়ে আসছে ইরান। তখন থেকেই দামেস্কের ওপর তেহরানের প্রভাব বেড়েছে। উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে সিরিয়ায় ইসরাইলি বিমান হামলায় আইআরজিসির দুই সদস্য নিহত হয়েছিল। নিহত আইআরজিসির সেই সদস্য দুজন সিরিয়ায় সামরিক পরামর্শক হিসাবে কাজ করছিলেন। ইসরাইল গত ২৮ ডিসেম্বরও সিরিয়ার দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবারও বিমান হামলা চালিয়ে ইরানের ইসলামিক গার্ডের ১১ সেনাসদস্যকে হত্যা করে। এসব সেনাসদস্য সেদিন দামেস্ক বিমানবন্দরে একটি উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানাতে গিয়েছিলেন। ওই সময়েই ইসরাইলে বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। এসব সেনাসদস্য সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ইরানসমর্থিত সামরিক গোষ্ঠীগুলোর দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন ও ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সেনারা অবস্থান করছে। তারা এসব দেশের সশস্ত্র গোষ্ঠীদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকে।


ইরানের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তার ইসরাইলকে ভাবিয়ে তুলেছে। সিরিয়ায় ইরানের উপস্থিতি ইসরাইল কখনোই চায়নি। ইসরাইল একাধিকবার জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সমর্থনকারী চিরশত্রু ইরানকে কখনো সিরিয়ায় তাদের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে দেবে না। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসাবেই ইসরাইল সবসময় বিবেচনা করে আসছে। বিশেষ করে ইরান যাতে পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধি করতে না পারে, সেজন্য ইসরাইল শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য মিত্র দেশের সহযোগিতাও কাজে লাগিয়েছে। শুধু তাই নয়, ইরানকে ঠেকাতে জাতিসংঘকেও তারা ব্যবহার করেছে। এ উদ্দেশ্য সামনে রেখে ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতাও চালিয়ে যাচ্ছে। ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পেছনে ইসরাইলের যে মূল কারণ, তা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। মোট কথা ইসরাইল ইরানকে একঘরে করে ফেলার চেষ্টা করেছে। ইরানকে ঠেকাতে গত দুই দশকে ইরানের সাত পরমাণু বিজ্ঞানীকেও গুপ্তহত্যা করেছে। এ সাতজন পরমাণু বিজ্ঞানী ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের গুপ্তহত্যার শিকার। এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে কখনো গাড়িবোমা অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে রিমোট কন্ট্রোল পরিচালিত মেশিনগানের নির্ভুল নিশানায় বরাবরই সিদ্ধহস্ত মোসাদের চৌকস সদস্যরা। শুধু তাই নয়, গুপ্তহত্যায় বিষাক্ত গ্যাস কিংবা ম্যাগনেটাইজ বোমার মতো ভয়ংকর বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে মোসাদ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও