শীতকালে গ্রাম, মফস্সল বা শহর—সবখানেই ব্যাডমিন্টন খেলার তোড়জোড় শুরু হয়। গ্রামে ফসল তোলা শেষে ঘরের পাশে খালি খেত, উঠান; মফস্সলে খালি জায়গা বা মাঠ আর শহরে অলিগলি; বাড়ির সামনে বা ছাদে রাত জেগে ব্যাডমিন্টন না খেললে যেন শীতকালই জমে না।
আর এ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি থাকায় ব্যাডমিন্টন খেলার আরও ধুম পড়ে যায়। তবে এ খেলা খেলতে গিয়ে বৈদ্যুতিক স্পৃষ্ট হয়ে প্রতিবছর একাধিক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কিশোর বা তরুণেরাই এর শিকার হচ্ছেন। সামান্য অসতর্কতার কারণে ঝরে যাচ্ছে সম্ভাবনাময় প্রাণ। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
২২ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক তরুণের মৃত্যু হয়। মাঠের পাশ দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুতের লাইন থেকে খেলার জন্য সংযোগ দিতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। প্রথম আলোর এ খবর ধরে অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের আরও মৃত্যুর খবর আমরা পাই। ১১ ডিসেম্বর যশোরের অভয়নগরে বাড়ির ছাদে এক স্কুলছাত্র এবং ২২ নভেম্বর খুলনার কয়রার স্থানীয় মাঠে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয় ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে।
গত কয়েক বছরে এমন আরও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সব ঘটনাই ঘটেছে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি—এ কয়েক মাসে। স্বাভাবিকভাবে এ কয়েকটা মাসজুড়ে থাকে শীতকাল বা শীতের আমেজ। ২০২২ সালে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়, ফেনী সদর উপজেলায়; ২০২১ সালে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়, ফেনীর সোনাগাজীতে, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে, বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে; ২০২০ সালে হবিগঞ্জের মাধবপুরে, ময়মনসিংহের গৌরীপুরে, দিনাজপুরের হিলিতে ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একই সঙ্গে দুজনের মৃত্যুর একটি ঘটনাও আছে। মারা যাওয়া সবাই কিশোর-তরুণ।