কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মানবসভ্যতা কি মানবিক হয়েছে?

বণিক বার্তা ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৮

গ্রিক দার্শনিক ডায়োজেনিসকে নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে। জানা যায় রৌদ্রোজ্জ্বল এক দিনে দার্শনিক ডায়োজেনিস লণ্ঠন জ্বালিয়ে বাজারে গেলেন। দিনের আলোয় তার হাতে লণ্ঠন দেখে মানুষজন মজা পেল এবং জানতে চাইল, ‘দিনের বেলা লণ্ঠন জ্বালিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?’ লোকজনের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, ‘আমি আসলে মানুষ খুঁজছি, গ্রিসের কোন জায়গায় মানুষ পাওয়া যাবে বলতে পারো?’


গ্রিক দার্শনিক ডায়োজেনিস সেই কবে গ্রিসের রাস্তায় মানুষ খুঁজছিলেন, তারপর হাজার হাজার বছর কেটে গেল মানবসভ্যতায় কত পরিবর্তন এল, এখন বলা হচ্ছে মানবসভ্যতার চরম উৎকর্ষ চলছে। মানুষ বাহারি পোশাক পরছে, অত্যাধুনিক অট্টালিকায় থাকছে, আরাম-আয়েসের শেষ নেই। চারদিকে অর্থ-বিত্ত-বৈভবের পাহাড় আর সেসব সম্পদ নিজের পকেটগত করার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা সারা বিশ্বজুড়ে। দখলদারত্ব আর ক্ষমতায় টিকে থাকার আদিম স্বভাব দিনে দিনে আরো প্রকট হচ্ছে। মানুষ তার আরাম-আয়েস আর বেঁচে থাকার পেছনে যা ব্যয় করছে তারও বেশি ব্যয় করছে ধ্বংসের জন্য, অন্যের ওপর নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য। মানুষ সভ্যতা বিকাশের জন্য এত পরিকল্পনা, এত অর্থ বরাদ্দ করলেও আদতে কি মানবসভ্যতা মানবিক হয়েছে? তাহলে এত মারণাস্ত্র, এত যুদ্ধ কেন? আধিপত্য বিস্তার আর দখলদারত্বের নেশা যেটি সভ্যতার শুরুতে ছিল এবং ধারণা করা হচ্ছিল জ্ঞান-বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির বিকাশে মানুষ সভ্য হবে, মানবিক বিষয়গুলো প্রকট হবে, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, কিন্তু সেটি কোথায়? সভ্যতার শুরুতে মানুষ গোত্রে গোত্রে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ত, খুনখারাবি করত, ধ্বংসযজ্ঞ চালাত। সময়ের পরিক্রমায় বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হলো এবং এসব দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ অন্তঃরাষ্ট্র ও আন্তঃরাষ্ট্রে ব্যাপ্তি লাভ করল। মানবসভ্যতা প্রত্যক্ষ করল বিশাল ভয়াবহ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। ১৯১৪-১৮ সাল পর্যন্ত প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ১৭-২০ মিলিয়ন মানুষ নিহত হয়। এছাড়া বাস্তুহীন, পঙ্গু কত হয়েছে তার সঠিক তথ্য পাওয়া দায়। 


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিণতি ছিল আরো ভয়াবহ। ধারণা করা হয়, এ যুদ্ধে ১৯৪০ সালে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার (২ দশমিক ৩ বিলিয়ন) প্রায় ৩ শতাংশ প্রাণ হারায়, যার পরিমাণ ৭০-৮০ মিলিয়ন। তবে এ সংখ্যা বিভিন্ন সূত্রমতে ৫০-৫৬ মিলিয়নও মনে করা হয়। যুদ্ধে হতাহতদের প্রকৃত সংখ্যা কেবল অনুমান করা যেতে পারে। প্রকৃত সংখ্যা সত্যিকার অর্থে নিরূপণ করা সম্ভব নয়। সরাসরি নিহত হওয়ার বাইরে মহামারী, খাদ্যাভাব থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারণে অনেক মানুষ মারা যায়। আদতে সে খবর অনেক ক্ষেত্রে হিসাবে নেয়া হয় না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে আণবিক বোমার আক্রমণ ছিল মানবসভ্যতার ভয়াবহতম আঘাত, যার ক্ষত পৃথিবীর মানুষ এখনো ভুলতে পারেনি। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে তেজষ্ক্রিয়ার শিকার ব্যক্তিদের মতো যুদ্ধে আঘাত বা অসুস্থতার কারণে যারা কয়েক বছর পর মারা গেছে তাদের যুদ্ধের মৃতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা জানা নেই। 


ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় মার্কিন হামলার কথা নিশ্চয়ই পৃথিবীবাসী এখনো ভুলে যায়নি। ১৯৬৫-৭৫ সাল পর্যন্ত এ দীর্ঘ যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা আনুমানিক ৩০ লাখ। সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পুরনো গোলাবারুদ দ্বারা সৃষ্ট মারাত্মক দুর্ঘটনায় ৪২ হাজারেরও বেশি লোক মারা যায়। উত্তর ভিয়েতনামে মার্কিন বাহিনী ১৫ মিলিয়ন টন বোমা ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে, যার প্রায় আট লাখ টন দীর্ঘ সময় ভিয়েতনামের মাটি, পানি ও বায়ুকে দূষিত করে চলছে এবং করছে প্রাণসংহার। 


এমন অসংখ্য যুদ্ধ, হত্যার মাঝে স্মরণ করা যায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ৩০ লাখ মানুষ হত্যা করে। নয় মাসের এ যুদ্ধে বাস্তুহারা হয় কোটি মানুষ, ধর্ষিত হয় লাখো নারী। অস্ত্রের এ দুনিয়া শক্তি আর ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য শুধু টাকাই ব্যয় করছে না, বরং অনেক জ্ঞানী-বিজ্ঞানীর মেধাকে ব্যবহার করছে, অনেক শিশু-কিশোরের স্বপ্নকে কোরবানি দিচ্ছে। আহা! এটা কি মানুষের চরিত্র হওয়ার কথা। কিছু যুদ্ধ ও তার ভয়াবহ ফলাফল উপস্থাপনের মূল কারণ হলো হত্যা আর ধ্বংসের যে সংস্কৃতি মানুষ বহন করে চলছে তা কতটা মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করে সেটি উপলব্ধি করা। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও