‘আমলনামা’ নয়, হলফনামা যেন ‘অর্থহীন আনুষ্ঠানিকতা’
বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধানে 'হলফ' শব্দটির অর্থ দেখানো হয়েছে, 'সত্য বলা হচ্ছে বোঝানোর জন্য শপথ বা দিব্যি; ঈশ্বরের নামে শপথ'। এই অর্থে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যে হলফনামা জমা দিতে বাধ্য থাকেন, তাতে উল্লেখ করা সব তথ্য ও আয়-সম্পদ বিবরণী ঈশ্বরের নামে শপথ করে বলা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।
কিন্তু বরাবরের মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, আর তাতে যে 'উদ্ভট, বিভ্রান্তিকর ও দায়সারা' তথ্যের ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে, তাতে এর সত্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বর্তমান বাজারে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম লাখ টাকা ছাড়ালেও এক প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় ১৪৮ ভরি স্বর্ণের দাম দেখানো হয়েছে ৪০ হাজার টাকা।
একইভাবে আরেক প্রার্থী ২০ বিঘা জমির দাম দেখিয়েছেন দুই হাজার টাকা। আবার প্রতি বিঘা জমির দাম ১০০ টাকা দেখানোর নজিরও আছে। এ ছাড়া, ঢাকার বারিধারার মতো জায়গায় একটি ফ্ল্যাটের দাম ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেখিয়েছেন আরেকজন।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্লেষক ও বিশিষ্টজনরা বলছেন, এই হলফনামা রাজনীতিবিদদের 'আমলনামা' হতে পারত। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের 'অনীহা-অনাগ্রহ'র কারণে এটি 'অর্থহীন আনুষ্ঠানিকতা'য় পরিণত হয়েছে।