বিজয়ের ৫২ বছর এবং দেশের খাদ্যনিরাপত্তা

www.ajkerpatrika.com শাইখ সিরাজ প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪১

বিজয়ের ৫২ বছর পূর্ণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির অপরিহার্যতা অপরিবর্তিত রয়েছে। জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩-১৪ শতাংশ হলেও সাম্প্রতিক শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, শ্রমশক্তির ৪৪ শতাংশ এখনো কৃষিতে নিয়োজিত, মানে কৃষি এখনো বিনিয়োগের বড় ক্ষেত্র।


এই সময়ে এসে আমরা আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার কোন স্তরে রয়েছি, যে ক্ষুধাকে জয় করার জন্য আমরা জীবন বাজি রেখে স্বাধীন হয়েছি...এই ৫২ বছরে আমরা তার কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি? খাদ্যনিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের আগামী পরিকল্পনাটাই বা কী? মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা কণ্ঠে তুলেছি স্বাধীনতা দুর্বার ইচ্ছার গান—


বাংলার প্রতি ঘর ভরে দিতে চাই মোরা অন্নে 
আমাদের রক্তে টগবগ দুলছে মুক্তির রিক্ত তারুণ্যে


আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুধামুক্তির। একটি আত্মনির্ভরশীল জাতিতে পরিণত হওয়া। মূলত স্বাধীনতার সংগ্রাম ছিল কৃষকের...শ্রমিকের...সাধারণ মানুষের। পরাধীনতার শিকল ছিঁড়ে যে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনা হয়েছে...এই বিজয় অর্জিত হয়েছে তাদের রক্তের দামে। দুবেলা দুমুঠো ভাতের নিশ্চয়তা চেয়েই আমাদের সংগ্রাম আজও চলমান।


১৯৭১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি (৭৫ মিলিয়ন, ইউএনএফপিএ, ২০২০)। সেই সময় খাদ্যঘাটতি ছিল ২৫-৩০ লাখ টন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কৃষির ওপর ব্যাপক গুরুত্বারোপ করা হয়। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করাই ছিল স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য। তাই স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে আমাদের স্লোগান হয়ে ওঠে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষিকে ঘিরেই ছিল সে সময়কার উন্নয়নচিন্তা। কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাও ছিল। 


পরে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলে তৈরি পোশাক খাত চলে এলেও কৃষি সব সময়ই শক্তিশালী খুঁটি হিসেবে কাজ করেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৩৪ দশমিক ৫ কোটি মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছে। বিশ্বের যখন এই পরিস্থিতি, তখন খাদ্যনিরাপত্তার দিকে জোর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। খাদ্যনিরাপত্তার সবচেয়ে বড় বাধা জলবায়ু পরিবর্তন। একে কীভাবে মোকাবিলা করে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেই পরিকল্পনা করতে হবে।


কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বীজের গজানো, পরাগায়ন, ফুল ও ফল ধরা, পরিপক্ব হতে সুনির্দিষ্ট তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ও সূর্যের আলো দরকার। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দীর্ঘ সময় খরা থাকছে। অথবা অসময়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, হচ্ছে বন্যা। শীতকাল কম হচ্ছে বা বেশি হচ্ছে। এভাবে ফসল ফলানোর জন্য উপাদানগুলো পরিবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু বীজ বপন ও চারা রোপণের সময় পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। ফলে শস্য উৎপাদনে নানামুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কৃষকেরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ুর কারণে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে। আর এ কারণে গম, ছোলা, মসুর, মুগ ডালসহ কিছু কিছু ফসলের উৎপাদন কমে গেছে।


বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ। এ পর্যন্ত লবণাক্ততা, খরা, প্লাবনসহিষ্ণু এবং জিঙ্কসমৃদ্ধ ১৩৪টি উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে আমাদের রয়েছে লবণ, খরা, বন্যাসহিষ্ণু ধানের জাত। তবে সময় এসেছে এই জাতগুলোর সহনশীল ক্ষমতা আবার পরীক্ষা করার। প্রয়োজনে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানী এবং নীতিনির্ধারকদের সময় জয় করে চলতে হবে। যেকোনো বিপদের আগাম দিকটাও মাথায় রেখে এসব প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে যেতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও