অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম এবং ‘ট্রিলিয়ন ডলার’ অর্থনীতির স্বপ্ন

বণিক বার্তা ড. আতিউর রহমান প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪২

অর্থনৈতিক মুক্তির বিষয়টি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একেবারেই কেন্দ্রে ছিল। তাই তো ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি মুক্ত স্বদেশে পা রেখেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘... আমি জানতাম বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। বাংলার মানুষ মুক্ত হাওয়ায় বাস করবে, খেয়ে পরে সুখে থাকবে, এটাই ছিল আমার সাধনা।’ ওই ভাষণেই তিনি আরো বলেছিলেন, ‘যদি দেশবাসী খাবার না পায়, যুবকরা চাকরি বা কাজ না পায়, তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে—পূর্ণ হবে না। ... বাংলাদেশকে সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অবাস্তব রাষ্ট্র পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকালেই সেটিকে একটি ‘ভ্রান্ত প্রত্যুষ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। আর তাই সহনেতাদের নিয়ে বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমে ভাষা আন্দোলনসহ ইস্যুভিত্তিক অধিকারের সংগ্রাম করেছেন, পরবর্তীতে সংসদীয় রাজনীতির মাধ্যমে আমাদের অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হয়েছেন এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে, রাজনৈতিক পদ্ধতিতে সমাধানের সব পথ রুদ্ধ হওয়ার পর, সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের সময় অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে যথাযথ মনোনিবেশ করেছিল বঙ্গবন্ধুর সরকার। স্বপ্ন ছিল তার ‘সোনার বাংলা’ অর্জনের। 


বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই এগোচ্ছিল। মাত্র ৮ বিলিয়ন (মতান্তরে ৬ বিলিয়ন) ডলারের অর্থনীতি তার আমলেই ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। সেই অর্থনীতির আকার আজ ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, বঙ্গবন্ধু সরকারের সাড়ে তিন বছরে আমাদের মাথাপিছু জিডিপি (কারেন্ট ইউএস ডলারে) ১৮৬ শতাংশ বেড়ে ৯৯ ডলার থেকে ২৬০ ডলারে উন্নীত হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে শারীরিকভাবে হারানোর পরই এ অভিযাত্রায় ছেদ পড়ে। ১৩ বছর পর তার রেখে যাওয়া মাথাপিছু জিডিপির সমান করতে পেরেছিল পঁচাত্তর-উত্তর বাংলাদেশ। তাছাড়া তাকে হারানোর পরের ২২ বছরে আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে মাত্র ৫২ শতাংশ। ১৯৯০-এর পর দেশে গণতান্ত্রিক শাসন একটি মাত্রায় ফেরার পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অভিযাত্রাটি কিছুটা হলেও প্রাণ ফিরে পায়। মাঝে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বাধীন সরকার শাসনভার গ্রহণ করায় প্রকৃত অর্থেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাস্তবায়ন শুরু হলেও সে যাত্রা আবার থেমে যায় ২০০১-এ। বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় সব বিচারেই একটি নাটকীয় উল্লম্ফন শুরু হয় ২০০৮-এর পর যখন বঙ্গবন্ধু কন্যা দ্বিতীয়বারের মতো দেশের শাসনভার কাঁধে নেন।


সাম্প্রতিক সময়ে সামষ্টিক অর্থনীতিতে খানিকটা চ্যালেঞ্জ দেখা দিলেও এ কথা নিশ্চয় জোর দিয়ে বলা যায় যে গত এক যুগ দারিদ্র্য নিরসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করেছে। বিবিএসের সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপের তথ্যমতে, ২০১০ থেকে ২০২২ এ সময়কালে এ দেশের দারিদ্র্য হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে। অতিদারিদ্র্যের হার ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে। মাথাপিছু আয়ও এ সময়ের ব্যবধানে ব্যাপক হারে বেড়েছে বলে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। ৬৯৯ ডলার থেকে প্রায় চার গুণ বেড়ে ২ হাজার ৬৮৮ ডলার হয়েছে (বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে)। ২০১০ সালে দেশের একটি গড় পরিবার মাসে ১১ হাজার ২০০ টাকা ব্যয় করত আর ২০২২ সালে এর পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৩১ হাজার ৫০০ টাকা। মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করার পরও এ সময়ে একটি পরিবারের গড় ভোগের প্রকৃত পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও