শিশুশিক্ষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার অবসান হোক

যুগান্তর একেএম শাহনাওয়াজ প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:২৩

ভুলভ্রান্তিতে বোঝাই এনসিটিবির বইপত্র নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়ার রেশ না কাটতেই বিগত কয়েক মাস ধরে স্কুল শিক্ষার নতুন কারিকুলাম নিয়ে বেশ হইচই দেখে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করলাম। এখনো ভালো বুঝে উঠতে পারিনি। ইতোমধ্যে ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের অনেকে মানববন্ধন করেছেন। অনেক অভিভাবকের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।


যারা কারিকুলাম তৈরিতে যুক্ত ছিলেন, যারা নতুন পদ্ধতি শিক্ষকদের শেখাবেন, তেমন দু-একজন মাস্টার ট্রেইনার নতুন কারিকুলামের যৌক্তিকতা নিয়ে কাগজে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখছেন। কিন্তু নতুন কারিকুলামে শিক্ষার জোগানদাতা ও শিক্ষা গ্রহণকারী ভোক্তা পর্যায়ের মানুষদের যুক্তি ও অবস্থান অনেকটা বিপরীতমুখী। শিক্ষাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এমন অবস্থা অনাকাঙ্ক্ষিত। আবার অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্ট হননি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। তার যে ভাষায় বলা প্রতিক্রিয়া সংবাদপত্রে পড়লাম, তাতে আরেকবার মনে হলো এ মন্ত্রণালয়ে প্রকৃত শিক্ষাবিদের কেন প্রয়োজন!


প্রসঙ্গটি গুরুতর ও গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরও নির্বাচনি ডামাডোলে এবং নির্বাচন বর্জনকারী পক্ষের অবরোধ-হরতালে ঘটা নানা অরাজকতার মুখে শিক্ষাসংক্রান্ত বিতর্ক যেন ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে যা উচিত নয়। নতুন কারিকুলামের একটি ভালো দিক হচ্ছে, এতে গতানুগতিক মুখস্থবিদ্যা ও কোচিংনির্ভরতা থেকে বের করে শিক্ষার্থীদের আগামী দিনে এগিয়ে চলার জন্য যোগ্য করে তোলার চেষ্টা রয়েছে। শিখন ও শিখনফল অর্জনের মধ্য দিয়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগের আত্মনির্ভরশীল তরুণ সমাজ গঠনের একটি প্রত্যয় রয়েছে এ কারিকুলামে।


যে কোনো বড় পরিবর্তন প্রথমে একটি বড় ঝাঁকুনি দেয়। দীর্ঘদিনের অভ্যাসের বাইরে বলে নানা ধরনের সন্দেহ তৈরি হয়। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। উভয় দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে সমন্বয় করার জন্য সময় দিতে হয়। কিন্তু নতুন কিছু প্রয়োগ করতে গিয়ে এদেশের বিধায়করা রাতারাতি তার রূপান্তর ঘটিয়ে কৃতিত্ব জাহির করতে চান। সমস্যাটি এখানেই।


আমাদের দেশের সরকারগুলো শিক্ষা-উন্নয়ন নিয়ে বড় বড় কথা বললেও হালভাঙা নৌকার নাবিকদের দিয়েই যেন তীরে যেতে চাইছেন। তাই বারবার শিক্ষাব্যবস্থা ও কারিকুলাম নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাই চলছে কেবল। প্রায়ই বিদেশি ফরমুলা এনে দেশের বাস্তবতা বিবেচনা না করে কোনোরকম রূপান্তর ছাড়াই প্রয়োগ করা হচ্ছে। ফলে গিনিপিগ মরে যাচ্ছে খাঁচাতেই। আবার প্যাভিলিয়নে ফিরে আসতে হচ্ছে। যেমন: ২০১১ সালে আরোপ করা হয়েছিল সৃজনশীল পদ্ধতির পড়াশোনা। আমি ১৯৯৬ থেকে এনসিটিবির কারিকুলাম তৈরি ও পুস্তক প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ২০১১ সালে নতুন শিক্ষানীতির আলোকে কারিকুলাম তৈরির তাড়না ছিল। সেসময়ের শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের উপস্থিতিতে এনসিটিবির নীতিনির্ধারণী বৈঠকেও ছিলাম। সেখানে আমি প্রথম সৃজনশীল পদ্ধতির কথা জানলাম। বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের একজন ব্যাখ্যা করলেন, কিন্তু আমার দুর্বল মেধায় অনেকটাই স্পষ্ট হলো না। আমি সরলভাবে বললাম, শিশুর সৃজনশীল মেধা বিকাশের জন্য তাদেরকে যে কোনো অঞ্চলের স্কুলের শিক্ষকরা নিজেদের সুবিধামতো সপ্তাহে একদিন কাছের কোনো ঐতিহাসিক স্থাপনা, জাদুঘর, নদীর তীর বা ফুটবল খেলা দেখাতে নিয়ে যেতে পারেন। পরের সপ্তাহে যার যার ক্লাসে এসব নিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ অভিমত প্রকাশ করতে পারে। লিখে বক্তব্য প্রকাশ করতে পারে। মনে হলো, উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা আমার কথা ভালোভাবে নিলেন না। ২০১৬ সালে উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে এক স্নেহভাজন বাংলাদেশি পরিবারের সঙ্গে কদিন ছিলাম। দেখলাম ক্লাস থ্রির এক শিশু সৃজনশীল বাড়ির কাজ তৈরি করছে। আগের সপ্তাহে স্কুল থেকে শহরের কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থাপনা দেখিয়ে এনেছে। এখন বেলফাস্টের মানচিত্র এঁকে সেখানে স্থাপনাগুলো নির্দেশ করছে শিশুটি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও