ঢাকার ওয়ারীতে এক পরিবারের ভয়ংকর রাত
‘অসহায় অবস্থায় একটি ভয়ংকর রাত পার করেছি আমরা। মনে হচ্ছিল, এই বুঝি বাসার ভেতরের গেট ভেঙে তারা ঢুকে পড়ল। শত শত লোক আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্র নিয়ে বাসার মূল ফটকের ভেতরে ঢুকে হুমকি দিচ্ছিল। তারা পুরো বাসা এমনভাবে ঘিরে রেখেছিল, এখান থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় ছিল না।’ এ বিবরণ দিয়েছেন ঢাকার নবাব স্ট্রিটের বাসিন্দা রুমানা রিফাত।
রুমানা প্রবীণ আইনজীবী সৈয়দ আজহারুল কবিরের মেয়ে। রুমানার ভাই সৈয়দ ইজাজ কবির একজন ব্যারিস্টার। একটি মারামারির মামলায় গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওয়ারীর ওই বাসা থেকে এই বাবা-ছেলেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর দুই দিন পর গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রুমানাদের বাসার ২ কর্মচারীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেন ডিবির সদস্যরা। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জন রুমানাদের বাসার পাশে একটি মার্কেট ভবন নির্মাণে রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করছিলেন।
আজ রোববার সরেজমিনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশের সদস্যরা যুক্ত হয়েছেন। রুমানাদের বাসার পাশে যে জায়গায় মার্কেট নির্মাণের কাজ চলছে, সেখানকার দুই বিঘা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের সঙ্গে আল মুসলিম বিল্ডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরোধ চলছিল। শনিবার ডিবির অভিযানে ২ কর্মচারীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তারের পরই ওই জমি দখল করে নেন মুসলিম বিল্ডার্সের লোকজন। নির্মাণাধীন মার্কেটের দোতলার অংশটি রাতের মধ্যেই ভেঙে ফেলা হয়। বাইরের অংশে টিনের বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। জমির দখল বুঝে নেওয়া ব্যক্তিরা বলেছেন, ডিবি ও থানা-পুলিশ ওই জমি তাঁদের দখল করে দিয়েছে।
আর আজহারুল কবিরের পরিবার বলছে, এই জমি দখলের জন্য পরিকল্পিতভাবে বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের পর কর্মচারী ও রাজমিস্ত্রিদের গ্রেপ্তার করে রাতের আঁধারে পুলিশের সহায়তায় জমি দখল করা হয়েছে। এখন বাবা-ছেলে যেন জামিন না পান, সে জন্য গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে ডিবি। যদিও ওই মামলার এজাহারে বাবা-ছেলের নাম নেই।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- জমি নিয়ে বিরোধ