মেয়ের ২৬ টুকরা সেলাই করা লাশ হাতে পেয়েছিলেন মা, এখনো বিচারের আশায়
‘বিচার যদি করতি চায়, তো হয়। গরিবের বিচার কেউ করে না। অনেক রাগ ওঠে।’ কথাগুলো বলতে গিয়ে গলা ধরে এসেছিল শিরিনা বেগমের। সাড়ে ১১ বছর আগে কিশোরী মেয়ের টুকরা টুকরা লাশ ডোম হাতে সেলাই করে একটা আকৃতি দিয়েছিলেন। সেলাই করা লাশ হাতে পাওয়ার পর থেকে থানা–পুলিশ, আইনজীবী, আদালত—অনেক ছোটাছুটি করেছিলেন শিরিনা বেগম। আসামি গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন।
কিন্তু ছয় বছর আগে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের শেষ পর্যায়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান আসামি। কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ ২৬ টুকরা করার ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পড়া আসামি কীভাবে লাপাত্তা হন, তা নিয়ে এখনো বিস্ময় প্রকাশ করেন মামলাটির সঙ্গে যুক্ত আইনজীবী ও কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা।
২০১২ সালের ১ জুন রাজধানীর হাতিরপুলের নাহার প্লাজায় ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন শিরিনা বেগমের কিশোরী মেয়ে রুমি (১৫)। আসামি সাইদুজ্জামান বাচ্চুর (২৮) সঙ্গে মুঠোফোনে পরিচয় হয়েছিল তার।
ঘটনার ৫ বছর পর ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল চাঞ্চল্যকর এই মামলায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–৩ সাইদুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ দেন। সেদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন শিরিনা বেগম। তবে সেই রায় তাঁকে স্বস্তি দিতে পারেনি। কারণ, রায় ঘোষণার মাস ছয়েক আগেই হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পলাতক হয়ে যান আসামি।
‘না খুঁজলে কি আসামি ধরা পড়ে’
শিরিনা বেগম জানান, মামলার রায় ঘোষণার আগেই তিনি শুনেছিলেন যে আসামি সাইদুজ্জামান জামিন পেয়ে গেছেন। সেই আসামি এখন পর্যন্ত ধরা না পড়ায় তাঁর প্রচণ্ড রাগ হয়। তিনি বলেন, ‘না খুঁজলে কি ধরা পড়ে? যারা ছাইড়া দিছে, তারা চেষ্টা না করলে ধরা পড়বে? কার কাছে বিচার চাইব? সেই ক্ষমতাও নাই। আইনজীবী কইল, যদি কোনো দিন পুলিশ আসামিরে ধরতে পারে, তাইলে ফাঁসি হবে। এ রকম একটা কাজ (হত্যাকাণ্ড), আসামি ছাইড়া দিয়া ফাঁসির অর্ডার দেয়।’
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- ধর্ষণের পর হত্যা
- বিচারের দাবি