নতুন শিক্ষাক্রমে দুর্বলতা কোথায়?
জাতীয় শিক্ষাক্রমের ঘোষণা আসার পর এই নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই সব সমালোচকদের একটি বড় অংশ শিক্ষাক্রমের ভেতরে ঢুকতে পারেনি কিংবা যে পেরেছে, সে আসল জায়গায় পয়েন্ট আউট করতে পারেনি।
ফলে শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় একধরনের ধূম্রজাল তৈরি হচ্ছে। আমাদের শিক্ষাক্রম ঠিক কোন কোন বিষয়ে দুর্বল, সেই বিষয়ে আলোকপাত করা জরুরি বলে মনে করছি।
উন্নত বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই জাতীয় শিক্ষাক্রমে বয়সভিত্তিক শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে সুস্পষ্ট একটি ধারণা দেওয়া হয়, যাতে করে সহজে বোঝা যায় শিক্ষার স্তর।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষার স্তর ৬:৩:৩:৪। অর্থাৎ ৬ বছর প্রাথমিকে, ৩ বছর নিম্ন মাধ্যমিকে, ৩ বছর মাধ্যমিকে আর ৪ বছর স্নাতকে। ১৬ বছরের শিক্ষাজীবন শুরু হবে ৪-৫ বছর বয়সে। অথচ আমাদের শিক্ষাক্রমে প্রাক্-প্রাথমিক কিংবা মাধ্যমিক স্তরে কে কোন বয়সে প্রবেশ করবে, তা উল্লেখ করাই হয়নি।
শিক্ষাক্রমে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক ধরা হলেও একসময় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিকে উচ্চমাধ্যমিক বলা হলেও এবারের শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় এই দুই শ্রেণিকে ঠিক কোন স্তরে ফেলা হবে, পুরো তুলে ধরা হয়নি।
এমনকি দায়সারাভাবে এই দুই শ্রেণিকে শিক্ষাক্রমে স্থান দেওয়া হয়েছে, যার কোনো সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। পাঠ্যপুস্তক বা বিষয়গুলো কী থাকবে, তা বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে মোট ভরের তিন-চতুর্থাংশ বিশেষায়িত বিষয়সমূহের জন্য এবং এক-চতুর্থাংশ ভর আবশ্যিক বিষয়সমূহের জন্য বরাদ্দ থাকবে এবং এই বিষয়গুলোতে বিভিন্ন শিখনক্ষেত্রের যোগ্যতাসমূহের সমন্বয় থাকবে।
একসময় একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিকে উচ্চশিক্ষার কাতারে ফেলা হতো। সময়ের সঙ্গে তার পরিবর্তন এসেছে। আমাদেরও উচিত এই চিন্তাধারার পরিবর্তন আনা। আমি মনে করি, আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায়ও ৬:৩:৩:৪ অনুসরণ করা উচিত। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক, নবম শ্রেণি পর্যন্ত নিম্ন মাধ্যমিক আর দশম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত মাধ্যমিক।
- ট্যাগ:
- মতামত
- শিক্ষাব্যবস্থা
- নতুন শিক্ষাক্রম