ব্যাংকে সব মাধ্যমেই অর্থ লেনদেন কমেছে
দেশের ব্যাংক খাতে সব মাধ্যমেই অর্থ লেনদেন কমেছে। আগস্টের তুলনায় গত সেপ্টেম্বরে ব্যাংকে চেকের মাধ্যমে লেনদেন কমেছে ১৫ শতাংশেরও বেশি। একই সময়ে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে লেনদেন কমেছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে ক্রেডিট কার্ডে ১ শতাংশ, ডেবিট কার্ডে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ লেনদেন কম হয়েছে। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবা হিসেবে পরিচিত মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস) ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লেনদেনও কমেছে। এমএফএসে লেনদেন ১ শতাংশ কমলেও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লেনদেনসংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি বছরের শুরু থেকেই দেশের ব্যাংক খাতে অর্থ লেনদেনে ছন্দপতন চলছে। যেমন এক বছর আগের তুলনায় এখন ব্যাংকগুলোয় চেকের মাধ্যমে লেনদেন কম হচ্ছে। লেনদেন কমছে ইএফটি, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ডসহ অন্যান্য মাধ্যমেও। তবে এক্ষেত্রে কিছু মাধ্যমে লেনদেন কমলেও অন্য মাধ্যমগুলোয় লেনদেন বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে। কিন্তু চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। ওই সময় এক সঙ্গে দেশের সব ধরনের পেমেন্ট ব্যবস্থায় লেনদেন কমে গেছে। এ ধরনের ঘটনা দেশের ব্যাংক খাতে এর আগে কখনই দেখা যায়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ছাড়াও দেশের অর্থনীতিতে নানামুখী সংকট চলছে। জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংকের ক্রয়ক্ষমতা পড়ে গেছে। এ কারণে বাজারে পণ্য বিক্রি কমেছে। আবার মূল্যস্ফীতির প্রভাবে সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের ক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে। দেশের আমদানি কমে গেছে প্রায় এক-চতুর্থাংশ। রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার পাশাপাশি রফতানি প্রবৃদ্ধিও শ্লথ। সংকটের প্রভাবে গ্রাহকরা ব্যাংকের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ডলারের বাজারে অস্থিতিশীলতাসহ অর্থনীতির নানামুখী এসব সংকটের প্রভাবে ব্যাংকে লেনদেন কমে গেছে।