ধারদেনা করার অবস্থাও নেই ন্যাশনাল ব্যাংকের
আমানতকারীর স্বার্থে প্রতিটি ব্যাংকের মোট দায়ের ১৭ শতাংশ বিধিবদ্ধ তারল্য হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখা নিয়ম। এর মধ্যে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের বিপরীতে রাখা যায় ১৩ শতাংশ; বাকি ৪ শতাংশ রাখতে হয় নগদে (সিআরআর)। বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের (এনবিএল) অবস্থা এতটাই নাজুক, টানা ১৪ মাস বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণ করতে পারছে না। এ পটভূমিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৩৩৭ কোটি টাকা জরিমানা করলেও তা পরিশোধের অবস্থায় নেই ব্যাংকটি। গ্রাহক চাহিদা মেটাতে এনবিএল তার সব বিল-বন্ড বন্ধক রেখে যতটুকু সম্ভব দেনা করে ফেলেছে। এখন আর ধার করার মতো পরিস্থিতি ব্যাংকটির নেই। তারল্যের মহাসংকটে পড়ে এনবিএল এখন সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সুদে গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত নিচ্ছে। আবার ব্যাংকটি টিকিয়ে রাখতে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথাও ভাবছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আর্থিক দুরবস্থা তুলে ধরে খোদ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি পরিচালনা পর্ষদের কাছে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে এ বছরের অক্টোবরভিত্তিক আর্থিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, এ বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকের নিট আমানত ১ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা কমেছে। এর মধ্যে করপোরেট আমানত তোলা হয়েছে ১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। এ অবস্থা সামলাতে ট্রেজারি বিল, বন্ডসহ বিভিন্ন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা ৬ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা বন্ধক রেখে ধার নেওয়া হয়েছে। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৬ হাজার ২২৬ কোটি এবং বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৭৬ কোটি টাকা দেনা করা হয়েছে। ফলে আগামীতে তারল্য চাহিদা মেটানোর মতো কোনো সিকিউরিজ নেই। এটি উচ্চ তারল্য ঝুঁকির ইঙ্গিত করে।