ভোট থেকে দূরেই থাকছে বিএনপি?
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ করা হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন ইস্যুতে মতভিন্নতা আছে। বিশেষ করে দেশের বড় দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবস্থান একেবারে বিপরীত মেরুতে। আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি দল নির্বাচনযুদ্ধে নেমে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করলেও বিএনপি ও সমমনারা তফসিল প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন প্রতিহত করার হুমকি দিয়ে আন্দোলনে আছে।
এই প্রেক্ষাপটে সরকার ও বিরোধীপক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে মতবিরোধ নিরসনের কোনো সুযোগ এখনো আছে কি না সে আলোচনাও শেষ হয়ে যায়নি। রাজনীতি বিশ্লেষকের মধ্যে কেউ কেউ মনে করছেন, তফসিল হয়ে গেলেও সমঝোতার সুযোগ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তাদের মতে, অতীতেও তফসিল ঘোষণার পর এ ধরনের সমঝোতার নজির রয়েছে।
রাজনৈতিক দল কিংবা নাগরিক সমাজের উদ্যোগে এ সমঝোতা হতে পারে। অবশ্যই বাইরের কোনো রাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় নয়। আবার এমন কথাও আছে যে নির্বাচনী ট্রেন স্টেশন ছেড়ে দিয়েছে, বিএনপির আর এই ট্রেনে ওঠার সুযোগ খুব কম। অবশ্য আন্দোলন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে তারা সরাসরি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিলে ভিন্ন কথা।
নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে তফসিলকে প্রত্যাখ্যান করে রোববার ও সোমবার টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে রাজপথের বিরোধীদল বিএনপি। তফসিল ঘোষণার পরও সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো সহিংস আন্দোলন চালাচ্ছে। হরতাল-অবরোধ ডেকে যানবাহনে আগুন দিচ্ছে।
এমনকি ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। মানুষ সন্ত্রাস-সহিংসতা পছন্দ করে না। মানুষ ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়, কিন্তু সেটা জীবন ও সম্পদের বিনিময়ে নয়। সেজন্যই বিএনপিসহ অন্যদের সহিংস আন্দোলনের সাফল্যের কোনো সম্ভাবনা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা দেখছেন না। বিএনপি কোন আশায় আন্দোলনের গান গাইছে, তা স্পষ্ট নয়। এবার নির্বাচন থেকে দূরে থাকলে বিএনপির সংকট আরও বাড়বে বলেই মনে হয়।