জাতির জীবনে প্রেরণা

www.ajkerpatrika.com মামুনুর রশীদ প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১১:০৩

মানুষের জীবনে স্বর্ণযুগ সব সময় আসে না। আমরা যারা শিল্প-সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত তারা সব সময়ই জীবন থেকে প্রেরণা খুঁজি। একটা বড় প্রেরণার জায়গা তৈরি হয়েছিল ভাষা আন্দোলনের সময়ে, যার একটা সফল সমাপ্তি হয়েছিল এবং আমরা আমাদের প্রিয় ভাষাকে রক্ষা করতে পেরেছি। এরপর ষাটের দশকের গণ-অভ্যুত্থান এবং যার পথ ধরে মুক্তিযুদ্ধ। তারও একটা সফল সমাপ্তি ঘটেছিল। এই সবকিছুই এসেছিল রক্তের বিনিময়ে। কিন্তু পঁচাত্তরে এসে আবারও একটি রক্তক্ষয়ী প্রতিক্রিয়াশীল অভ্যুত্থান ঘটে। যার ফলাফল ১৫টি বছরের জন্য দেশটিকে নিয়ে পুনরায় বিপরীতমুখী প্রচেষ্টা চলে। এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াই এবং তারও একটা সফল পরিসমাপ্তি ঘটে। এই সময়ে একটা প্রতিবাদী শিল্প-সাহিত্যের জন্ম নেয়। সব রাজনৈতিক শক্তি সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম করেছিল। একমাত্র মৌলবাদী এবং একাত্তরের শত্রুদের সঙ্গে নেওয়া হয়নি।


কিন্তু গণতন্ত্রের এই সংগ্রামের একটা সফল সমাপ্তি হলেও সাম্প্রদায়িক শক্তির অবসান ঘটেনি। এরপর নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক শক্তির রাষ্ট্রক্ষমতায় আরোহণ ঘটে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সমাজে অনৈক্য থেকেই যায়। সেই অনৈক্য নানা ধরনের সংঘর্ষ এবং আন্দোলনের পথ ধরে জনজীবনে নতুন কোনো প্রেরণার সৃষ্টি করে না। এ এক দুঃখজনক ঘটনা এবং সব সময়ই জিম্মি হয়েছে মানুষ। যেমন—হরতাল, অবরোধ, দলে দলে সংঘর্ষ এবং রাষ্ট্রক্ষমতায় কখনো মৌলবাদীদের অংশীদারি আবার কখনো ব্যবসায়ীদের ব্যাপকভাবে অংশীদারি।


এই অনৈক্যের ফলে আমাদের সম্পদ বিপুলভাবে বিদেশে পাচার হয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের রাষ্ট্রক্ষমতায় অংশগ্রহণের ফলে একটা অসম্ভব কল্পনাতীত বিত্তের মালিক তাঁরা হয়ে যান। দেশটা মুক্তিযুদ্ধের সময়কার যে অঙ্গীকার ছিল সমাজতন্ত্রের, তা থেকে ছিটকে গিয়ে একটা পুঁজিবাদী ধারার দেশে পরিণত হয়। এই পুঁজিবাদের যে বড় শক্তি তা হলো বৈষম্য। আর এই বৈষম্যের ফলাফল হচ্ছে একশ্রেণির লোক রাতারাতি বড়লোক হবে, অন্যদিকে কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্য বরণ করবে। আর এই পুঁজিবাদ রাষ্ট্রের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা, স্বাস্থ্য এসব নাগরিক অধিকারকে বিপর্যস্ত করে ব্যক্তিগত ব্যবসার অন্তর্গত করে তুলবে। রাষ্ট্রমালিকানাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে তারা ব্যক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলবে, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার তৈরি করে বিপুল বিত্তের মালিক বনে যাবে। আমাদের চোখের সামনেই ছোট্ট একটি ক্লিনিক মাত্র দুই দশকের মধ্যে সারা দেশে বিপুল অবকাঠামো তৈরি করে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে।


বিশ্ববিদ্যালয় বা স্কুল-কলেজের শিক্ষাব্যবস্থাও একেবারেই ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গড়ে তুলে অকল্পনীয় বিত্তের মালিক হয়ে যাচ্ছে। এই ব্যবস্থাকে কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না। ফলে দুটো ব্যবস্থাই ব্যক্তি ব্যবসায়ীদের হাতে পড়ে একধরনের প্রায় লুটেরা সম্পদে পরিণত হয়েছে। এই শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা দেশটাকে বসবাসের অযোগ্য মনে করছে। যেসব শিক্ষাঙ্গনে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ বেশি, সেগুলোতে অভিভাবকেরা বিপুল অর্থ লগ্নি করছেন। এই লগ্নির টাকা কোথা থেকে আসে? একদিকে ব্যবসায়ীদের মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা আর অন্যদিকে আমলা-রাজনীতিবিদদের অবৈধ অর্থ। শিক্ষার্থীদের বিদেশে পাঠাতে পারলে অর্থ পাচারের সুবিধা হবে। আর বিদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটা শিক্ষা-বাণিজ্যের মধ্যে জড়িয়ে যায়। তাদেরও তৃতীয় বিশ্বের শিক্ষার্থীর দরকার। প্রয়োজনবোধে তারা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে অভিবাসনের আইন পর্যন্ত সংশোধন করতে পারে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও