বেসরকারি খাতে ব্যবসা কেন দিন দিন কঠিন হচ্ছে
মাঝে বিভিন্ন ফোরামে দেশের অনেক বেসরকারি খাতের মানুষের সঙ্গে কথা হয়। সবার মধ্যে একটি হতাশা। ‘কী হয় কী হয়’ ধরনের একটি অস্থিরতা। বেশির ভাগেরই ব্যবসা নিম্নমুখী। সাধারণত নির্বাচনের বছরে এমনিতে ব্যবসা কিছুটা স্থবির থাকে; কিন্তু এবারের মতো প্রায় সবার একসঙ্গে খারাপ হওয়া কখনো দেখা যায়নি। প্রথম আলো ২৩ মে, ২০২৩ এর রিপোর্ট অনুসারে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত উৎপাদন আর সেবা খাতের ২০৪টি কোম্পানির মধ্যে ১১৯টি কোম্পানিরই ব্যবসা খারাপের দিকে। যাঁরা লাভে আছেন, তাঁদের অনেকেরই লাভের পরিমাণ কমছে।
গত ৩০ আগস্ট জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) এক জরিপে বলা হয়েছে ৭১ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্ট। এরপর চীনা ব্যবসায়ীরা ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট পেতে সমস্যা থেকে শুরু করে ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে তাঁদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। কেন এ অবস্থা?
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, এ দেশ কাঁচামাল ও মূলধন মেশিনারিজের জন্য পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হলেও এদিকে নজর দেওয়ার কোনো চেষ্টা করা হয়নি। ফলে এখন রিজার্ভ সংরক্ষণের জন্য সরকার যখন এলসি কমিয়ে দিয়েছে, তখন সব কারখানায় উৎপাদন ধাক্কা খেয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত ট্রেডিং ব্যবসাও এখন অনেক কমে গেছে।
এরপর আসছে কাস্টমসের অবস্থা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের টাইম রিলিজ স্টাডি-২০২২ অনুযায়ী, পণ্যবাহী কার্গো সমুদ্রবন্দরে পৌঁছানোর পর ছাড়ের জন্য ব্যবসায়ীদের গড়ে ১১ দিন ৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। যেহেতু আমদানি কমেছে, এ সময় কমার কথা; কিন্তু বাস্তবে বেড়েছে। এর দুটি কারণ হতে পারে, প্রতিবেশী দেশের পণ্য খালাসের জন্য জেটি ব্যস্ত থাকে, অথবা কাস্টমস তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ধীর করে বেশি ডেমারেজ নিচ্ছে। দুই ক্ষেত্রেই আমাদের ব্যবসায়ীদের ক্ষতি।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ব্যবসা
- সেবা খাত
- বেসরকারি খাত
- মন্দাভাব