বঙ্গবন্ধু টানেলের পুরোপুরি সুফল পেতে হলে
স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল এখন আর স্বপ্ন নয়। গত ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এ টানেল উদ্বোধন করেন। ২৯ অক্টোবর থেকে এই টানেল জনগণের যাতায়াতের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে এবং টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ টানেল যুগে প্রবেশ করেছে। এ অর্জন অত্যন্ত সম্মান এবং মর্যাদার। এ অর্জন বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইমেজ বাড়িয়ে দিয়েছে। টানেলের দুই পাশে অত্যাধুনিক সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। নিরাপত্তায় ব্যবহৃত হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এ টানেল অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিশাল এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। এখন দক্ষিণ চট্টগ্রামে ব্যাপক হারে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়বে। চট্টগ্রামে গড়ে উঠবে ওয়ান সিটি টু টাউন। তবে পতেঙ্গা থেকে টানেল পাড়ি দিয়ে বের হওয়া গাড়িগুলোর সহজ চলাচলের জন্য টানেলের দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রান্তের সড়কগুলো চার লাইন হওয়া খুবই জরুরি। বিশেষ করে বাঁশখালীর বিদ্যমান বর্তমান সড়কটি চার লাইনে উন্নীত করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে টানেলের সুফল শতভাগ পাওয়া যাবে না। তাই টানেলের সুফল পেতে বাঁশখালীর বিদ্যমান সড়কটি অতিদ্রুত চার লাইনে উন্নীত করা জরুরি।
বঙ্গবন্ধু টানেলে মোট দুটি টিউব রয়েছে। প্রতিটি টিউবের ভেতর দিয়ে নির্মিত হয়েছে দুই লাইনের সড়ক। সুতরাং টানেলটি মোট চার লাইনের। সংযোগ সড়কসহ টানেলটির মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার, এর মধ্যে নদীর তলদেশে বিদ্যমান টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেলের ভেতরের ডায়ামিটার ১০ দশমিক ৮০ মিটার আর বাইরের ডায়ামিটার ১১ দশমিক ৮০ মিটার। টানেলটি নদীর তলদেশের ১৮-৪৩ মিটার নিচ দিয়ে গেছে। দুই টানেলের ভেতর আবার একটির সঙ্গে আরেকটির যোগাযোগ করিডোর রয়েছে। টানেল নির্মাণের মোট বাজেট ১১০ কোটি ডলার। এক্সিম ব্যাংক অব চায়না এর মধ্যে অর্ধেক অর্থ জোগান দিয়েছে আর বাকিটা বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে। চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এ টানেল নির্মাণ করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এ টানেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টানেলের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন। বোরিং মেশিনসহ এ টানেলের গুরুত্বপূর্ণ কনস্ট্রাকশন ম্যাটেরিয়ালগুলো চীনে নির্মাণ করে এখানে আনা হয়েছে। এই হচ্ছে কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে নির্মাণাধীন স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেলের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত।