বিশ্বকাপে এ কোন বাংলাদেশ?
কষ্ট হচ্ছে মাহমুদউল্লাহর জন্য। সেদিন এমন একটা শতকের পরও বাংলাদেশকে জেতাতে পারলেন না। তবে মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশের মান বাঁচিয়েছেন। ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্তি যখন মাত্র ৫৮ রান তখন তিনি মাঠে নামেন। দলের বাঘা বাঘা খেলোয়াড়রা যেখানে প্রায় শূন্য রানে সাজ ঘরে ফিরে গেছেন সেখানে মাহমুদউল্লাহর কীই বা করার ছিল?
তার ওপর সত্যি কি দল আস্থা রেখেছে? আস্থা রাখলে তার তো আট নম্বরে ব্যাট করার কথা নয়। ৮ নম্বরে খেলতে এসে একজন খেলোয়াড় দলকে কতটুকুই বা এগিয়ে নিতে পারে? কিন্তু মাহমুদউল্লাহ সত্যি সত্যি দলের মান বাঁচিয়েছেন। অনেকে হয়তো প্রশ্ন তুলবেন হেরে যাওয়া দলের আবার মান-সম্মান বাঁচলো কী করে? তাদেরকে বিনীত ভাবে একটি পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিতে বলব। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে খেলার দিন মাহমুদউল্লাহ যখন খেলতে নামেন তখন দলের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৫৮। দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা যেভাবে মাঠে নেমেছেন এবং নিয়ম রক্ষার নজীর দেখিয়ে মাঠে নেমেই ব্যস্ততা দেখিয়ে মাঠ ছেড়ে চলে গেছেন সেখানে মাহমুদউল্লাহও মাঠে নেমেই পূর্বসুরিদের অনুসরণ করলে খুব কি অন্যায় করতেন? হ্যাঁ মাহমুদউল্লাহ একটা অন্যায় করেছেন। দলের করুণ বিপর্যয়ের মুখেও দলের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। ১১১ বলে ১১১ রান করেছেন। এর ফলে বাংলাদেশের রান সংখ্যা দাঁড়ায় ২২৭। ধরা যাক মাহমুদউল্লাহ, সাকিব, মুশফিকদের মতো মাঠে নেমেই যদি মাঠ ছাড়ার তাড়া দেখাতেন তাহলে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে হারের লজ্জাজনক রেকর্ডের মালিক হতো। মাহমুদউল্লাহ সেই লজ্জা থেকে বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছেন। তাকে ধন্যবাদ দিতে গিয়েও কেন যেন বিব্রত বোধ করছি। যারা সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে বাংলাদেশের খেলা দেখেছেন তারা নিশ্চয়ই মাহমুদউল্লাহর বিষন্ন মুখ দেখেছেন। এমন একটা শতক হাকানোর পরও মুখে হাসি ছিল না। বরং মুখ জুড়ে চরম উপেক্ষার কষ্ট ছিল সারাক্ষণ। সত্যি কথা বলতে কী এই বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহর তো খেলার কথাই ছিল না। অনেক অবহেলার সাগর পেরিয়ে মাহমুদউল্লাহ এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে জায়গা পেয়েছেন। যে ছিল সাইড বেঞ্চের বাসিন্দা সেই কিনা দলের পক্ষে বুক চিতিয়ে দুর্দান্ত লড়াই করলো। বাংলাদেশের হারা ম্যাাচে এটাই বড় প্রাপ্তি।