ভিসানীতির পরোয়া ও বিচলিত বচন
বেশ কয়েক বছর আগে থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বহু দেশে তাদের ভিসানীতিতে নিত্যনতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে আসছে। এটা একদিকে তাদের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত। অন্যদিকে এটাকে দেশে দেশে কর্তৃত্ব ফলানোর কৌশল অথবা চাপ হিসেবে মনে করা হয়। এছাড়া কোনো দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিপীড়ন বা অপকর্ম হচ্ছে এমন যুক্তি দিয়ে তারা বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ও ধমকের মাধ্যমে নতুন নির্দেশনা জারি করে। যতদূর জানা যায়, যেখানে তাদের স্ট্র্যাটেজিক দৃষ্টি পড়ে সেখানেই এই নীতি নতুন করে সাজানো ও আরোপের ব্যাপার ঘটে।
ব্যান ৩.০ অথবা ৪.০ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে উত্তর কোরিয়া, ভেনেজুয়েলা, নিকারাগুয়া, ইয়েমেন, ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, মালি, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিয়ানমার, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কঙ্গো, জিম্বাবুয়ে, কিউবা, মেক্সিকো, চীন, বেলারুশ প্রভৃতি দেশে। ইন্টারনেট সূত্রে প্রাপ্ত এই ২১টি দেশ ছাড়াও সম্প্রতি নাইজেরিয়া, উগান্ডা, সোমালিয়া ও বাংলাদেশ এবং আরও নাম না জানা অনেক দেশে তাদের নতুন ভিসানীতি বর্তানোর কথা শোনা যাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি অঙ্গনের মতো এত চাপ ও তোলপাড় অন্য কোনো দেশে শোনা যায়নি।
বাংলাদেশের জন্য ২০২৪ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন ভিসানীতি আরোপ করার কথা প্রচার করা হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সেটা প্রচারিত হলেও সরকারিভাবে এখনও কোনো ঘোষণা জানা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম করে তুলেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য হলো এ নীতি বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য বলবৎ করা হয়নি। কতিপয় মানুষ যারা দেশে সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে বাধা প্রদান করবে শুধু তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ সবাই সবসময় মার্কিন ভিসা নিয়ে মাথা ঘামায় না। এ দেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ ভিসানীতির কথা জানে না, বোঝেও না। তাই তারা এ বিষয়ে মোটেই বিচলিত নয়।
- ট্যাগ:
- মতামত
- মার্কিন ভিসা নীতি