ইউরেনিয়াম খায় নাকি মাথায় দেয়?
‘ইউরেনিয়াম কী বস্তু? এই জিনিস খায় নাকি মাথায় দেয়?’
দিনকাল যা পড়েছে, তাতে পরীক্ষায় এমন প্রশ্ন এলে উত্তরপত্রে ছেলেপেলে লিখে ফেলতেও পারে: ইউরেনিয়াম হলো ‘পঞ্চাশ বছর ধরে মাখছি’ টাইপের কদুর তেল বিশেষ। এটি খায় না। শিরঃপীড়া আরোগ্যে ও উত্তপ্ত মস্তিষ্ক শীতল করণে বিশেষ কার্যকর বিবেচনায় এটি মাথায় ঢালা হয়ে থাকে।
এই উত্তরকে ভুল সাব্যস্ত করে পরীক্ষক জিরো দিয়ে দিলে পরীক্ষার্থী খাতা চ্যালেঞ্জ করে বসতে পারে। সে বলে বসতে পারে, উত্তর সঠিক হয়েছে; কোনো ভুল নাই। সাক্ষী হিসেবে সে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সামনে ঠেলে ধরতে পারে। কারণ বিরোধী নেতাদের ঠান্ডা করতে ওবায়দুল কাদের ধন্বন্তরি কবিরাজের মতো দাওয়াই হিসেবে ইউরেনিয়াম মাথায় ঢালার কায়দা বাতলে দিয়েছেন।
গতকাল (৯ অক্টোবর সোমবার) রাজধানীতে একটি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিরোধী নেতারা রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করতে চেয়েছেন। এই কারণে তিনি তাঁদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দিতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ফখরুল, মইনের মাথায় রাশিয়ার ইউরেনিয়াম ঢেলে দেব। সবই (ঢেলে দেব)। দুই চালান আসছে। দুই চালানই আমরা ফখরুলের মাথায়.... কিছু গয়েশ্বরের মাথায়, কিছু আব্বাসের মাথায়, কিছু মইন আহমেদের মাথায়.... ।’ এই সময় পাশ থেকে একজন তাঁর কানের কাছে গিয়ে তাঁকে আরেকটা নাম মনে করিয়ে দেওয়ার ভঙ্গিতে বলেন, ‘রিজভী, রিজভী!’
ওবায়দুল কাদের হাসতে হাসতে তাঁর অসমাপ্ত বক্তব্য শেষ করতে গিয়ে বলেন, ‘...ও, হ্যাঁ, রিজভী পাগলার মাথায়ও কিছু ঢেলে দেব।’
ইউরেনিয়াম যে শুধু গরম মাথার পাগলাদের মাথা ঠান্ডা করা পাগলা মলম না, সেটি যে লম্ফঝম্ফ করে গরম হওয়া লোককে ঠান্ডা করাতে ওস্তাদ, তাও ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘মির্জা আব্বাস লাফায়। লাফালে...যে-ই লাফাবে ইউরেনিয়াম ঢেলে ঠান্ডা করে দেব। ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করব না। ইউরেনিয়াম মাথায় ঢেলে ঠান্ডা করে দেব।’