আকলিমাদের সুপেয় পানির কষ্টের দিন ফুরাল
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে খুলনার দাকোপ উপজেলা। সেখানকার চুনকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা আকলিমা খানম। তার দুই সন্তানসহ পরিবারের সবাই বছরের বেশিরভাগ সময় পেটের পীড়ায় ভোগেন। শুধু আকলিমা নয়, এ গ্রামের সব পরিবারেই যেন ডায়রিয়া বা আমাশয়ের মতো রোগ নিত্যসঙ্গী। আর দৈনন্দিন সকল কাজে লবণাক্ত পানির ব্যবহারকে এসব রোগের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
উপকূলীয় এই অঞ্চলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নোনা পানির ব্যবহারের কারণে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছে নারী ও শিশুরা। এখানে রোগবালাইয়ের তালিকায় আরও যুক্ত হয়েছে- চর্মরোগ, কিডনি ও জরায়ুজনিত নানান রোগ। উপকূলীয় এসব এলাকায় নারীদের গর্ভধারণের পরিমাণ কমে গেছে, গর্ভপাতের সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। একমাত্র নিরাপদ ও সুপেয় পানির অভাবেই মারাত্মক এসব রোগে দিনের পর দিন ভুগছেন উপকূলীয় এলাকার মানুষরা।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রত্যক্ষ ক্ষতির মুখে এসব অঞ্চল। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এসব এলাকার নদী, পুকুর ও জলাশয়ের লবণাক্ততা আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এ কারণে একদিকে যেমন রোগবালাই বাড়ছে, অন্যদিকে তেমনি খাবারের জন্য নিরাপদ পানিও পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে সেই অতিরিক্ত নোনা পানিই দৈনন্দিন সকল কাজে ব্যবহার করা লাগছে। ‘পানির অপর নাম জীবন’, অথচ আকলিমাদের মতো উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষেরা নিজের জীবন দিয়ে বুঝতে শিখেছেন এই প্রবাদবাক্যের যথার্থতা।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- সুপেয় পানি