হাওরে বিনাশী উন্নয়ন কেন?

দেশ রূপান্তর পাভেল পার্থ প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৩৪

দুনিয়ার এক বৃহৎ ব-দ্বীপ নদীমাতৃক বাংলাদেশ। এই ব-দ্বীপের মোট আয়তনের ছয় ভাগের এক ভাগজুড়েই হাওর জলাভূমি। বাংলাদেশে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড দেশে ৪১৪টি হাওর আছে বলে তাদের এক দলিলে উল্লে­খ করে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৪২৩টি হাওর রয়েছে।


সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৬০টি উপজেলার ৫৩৯টি ইউনিয়নে বিস্তৃত হাওরাঞ্চলে কয়েক কোটি মানুষের বাস। ধান আর মাছ দিয়ে হাওর বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। রাধারমণ, হাছন রাজা, শাহ আবদুল করিম, শীতালং শাহ, আরকুম শাহ, দূরবীন শাহ, উকিল মুন্সী কিংবা জালালের মতো কারিগরদের জ্ঞান ও মূর্ছনায় নিরন্তর প্রাণ পায় বাংলাদেশ। কয়লা, পাথর, বালি, গ্যাস, তেল সরবরাহ করে হাওর। জলবায়ু-দুর্গত সময়ে হাওরের পরিবেশগত অবদান খুবই গুরুত্ববহ। এখানেই আছে দুনিয়ার দুর্লভ মিষ্টি পানির জলাবনের অবশেষ চিহ্নগুলো।


দেশকে এত যে বিলায়, সেই হাওরের দুর্দশা আর কাটে না। রাষ্ট্র হাওরের জল-দানা আর সুরে বাঁচে, অথচ নির্দয়ের মতো হাওরকে বারবার বঞ্চিত করে রাখে। হাওরের প্রকৃতি ও সংস্কৃতি আমাদের অধিপতি উন্নয়নের মাথায় থাকে না। তাই হাওর ছিন্ন ভিন্ন করে মহাসড়ক বানানো হয়, জল-মাটির জটিল সংসার চুরমার করে তথাকথিত পর্যটনের বিলাসিতা হয়। যখন একের পর এক জমিনবোঝাই ফসল নিয়ে হাওর তলায় কিংবা তীব্র জলাবদ্ধতা তৈরি হয় তখন আবার আমাদের হুঁশ হয়। আমরা বলি হাওরের বুকে ‘অপরিকল্পিত উন্নয়ন করা ঠিক হয়নি।’ কিন্তু আমাদের নির্দয় উন্নয়নের ক্ষতচিহ্ন আর দগদগে ঘাগুলো হাওরের শরীরে রয়েই যায়।


আমাদের অধিপতি উন্নয়ননীতি বদলায় না। কারণ এই নীতি বিশ্বায়িত নয়া উদারবাদী বাহাদুরি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই নীতি কেবল ছিঁড়েখুঁড়ে মুনাফার ভাগাড় বানায়। মানুষকে প্রকৃতি ও সংস্কৃতি বিচ্ছিন্ন করে। আর তাই হাওরের বুকে বিনাশী উন্নয়নের কোপ পড়লেও আমরা চিৎকার করি না। নেত্রকোনা থেকে সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার থেকে সিলেট দেশের হাওর বাস্তুতন্ত্র নিরাপদে নেই। টাঙ্গুয়ার, শনির, দেখার, হাকালুকি, হাইল, সজনার কিংবা ঘুইঙ্গাজুরী হাওর কোনোটাই সুরক্ষিত নয়। হাওরের মূল সমস্যা দ্বিমুখী। একটি সমস্যা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতি ও স্থানীয় ক্ষমতার রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত।


অন্যটি আন্তঃরাষ্ট্রিক, যার সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ অভিন্ন নদীতর্কসহ নানা করপোরেট উন্নয়ন নৃশংসতা জড়িয়ে আছে। কোনো সমস্যা সমাধানেই রাষ্ট্রকে হাওরমুখী হতে দেখিনি। ফলে কী ঘটছে? প্রতিনিয়ত হাওর নিখোঁজ হচ্ছে। হাওরের প্রকৃতি ও সংস্কৃতি নিদারুণভাবে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। নামেমাত্র এখন স্থান আর নাম হিসেবে হাওরের ভূমিগত অবস্থান আছে, কিন্তু হাওরের সেই বাস্তুতন্ত্র আর বৈচিত্র্য উধাও হচ্ছে প্রতিনিয়ত। জলবায়ু সংকটের বিরূপ প্রভাব থাকলেও হাওরের এই সর্বনাশের জন্য মূলত উজান-ভাটির হাওর-বিনাশী উন্নয়ন তৎপরতাই দায়ী।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও