আপস নিয়ে যত কথা

www.ajkerpatrika.com মহিউদ্দিন খান মোহন প্রকাশিত: ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৫:১৩

উনসত্তরে আমি ছিলাম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের স্কুলটি ছিল থানা সদর শ্রীনগরে। সে সময় আমাদের দেশ, অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছিল আইয়ুববিরোধী গণ-আন্দোলনে উত্তাল। সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি—আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি। শেখ মুজিবকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর গদি রক্ষার জন্য আইয়ুব খান আন্দোলনের শেষদিকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক আহ্বান করলেন। প্রস্তাব করলেন শেখ মুজিবুর রহমানকে প্যারোলে মুক্তি দেবেন সে বৈঠকে অংশ নিতে। শেখ মুজিবও প্রথমদিকে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আপসনামায় স্বাক্ষর করার ঠিক আগমুহূর্তে বেগম মুজিবের আগমন ও পরামর্শ সবকিছু পাল্টে দেয়। প্যারোলে মুক্তি নিতে অস্বীকার করেন তিনি। (সূত্র: বাংলাদেশ: স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা, মওদুদ আহমদ)


উপায় না দেখে আইয়ুব খান তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হন। ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান শেখ মুজিবুর রহমান। ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) গণসংবর্ধনায় তৎকালীন ডাকসুর ভিপি তোফায়েল আহমেদ (বর্তমানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী) তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। আওয়ামী লীগসহ ডানপন্থী দলগুলো গোলটেবিল বৈঠকের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলেও মওলানা ভাসানীর ন্যাপ ও জুলফিকার আলী ভুট্টোর পিপলস পার্টি গোলটেবিল বৈঠকের নামে আপসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে ছিল সোচ্চার। মওলানা ভাসানী শেখ মুজিবকে গোলটেবিলে যেতে নিষেধ করেছিলেন। বলেছিলেন, এ থেকে পূর্ব বাংলার মানুষের মুক্তি আসবে না। মওলানার গোলটেবিল বৈঠক বিরোধিতাকে আমলে নেননি বঙ্গবন্ধু। তবে গোলটেবিল বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর ঢাকা প্রত্যাবর্তন করলে তেজগাঁও বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শেখ মুজিব ‘পূর্ব পাকিস্তানের আচকান-পাঞ্জাবি পরা’ রাজনৈতিক নেতাদের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি মওলানা ভাসানীকে রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। (সূত্র: আওয়ামী লীগ: উত্থানপর্ব ১৯৪৭-১৯৭০, মহিউদ্দিন আহমদ, পৃষ্ঠা-১৯৮)


শেখ মুজিবুর রহমান মওলানা ভাসানীকে অবসরে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর কথাই সঠিক প্রমাণিত হয়েছিল। গোলটেবিল বৈঠক কোনো সাফল্য বয়ে আনেনি। তবে মওলানা হুজুরকে দেওয়া কথা রেখেছিলেন শেখ মুজিব। তিনি বৈঠকে যাওয়ার আগে হুজুরকে কথা দিয়েছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের দাবির প্রশ্নে কোনো আপস করবেন না, করেনওনি। তো গোলটেবিল বৈঠক নিয়ে যখন পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়, তখন এর বিরোধীরা স্লোগান দিত, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’। ‘গোলটেবিল না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’। উল্লেখ্য, কিশোরকাল থেকে বামপন্থী রাজনীতিতে দীক্ষা নেওয়া আমিও এই স্লোগান দিয়েছি বড় ভাইদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও