অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার করা যাবে না
ডা. মো. সায়েদুর রহমান: প্রথমে একটা বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধক্ষমতা আসলে থাকছে না, বিষয়টা সে রকম নয়। ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে এর প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে উঠছে না। প্রতিরোধক্ষমতার ব্যাপারটা হচ্ছে, অ্যান্টিবায়োটিক আগে ওই ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসকে যেভাবে হত্যা বা নিষ্ক্রিয় করত, এখন সেটা করতে পারছে না। অ্যান্টিবায়োটিকের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের বেঁচে থাকার সামর্থ্য গড়ে উঠছে। ফলে এটাকে নিষ্ক্রিয় বা থামিয়ে রাখার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এটাকে বলা হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধক্ষমতা না থাকা। অ্যান্টিবায়োটিক ডেভেলপ করছে না ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের মধ্যে। এ কারণে অ্যান্টিবায়োটিক তার কার্যকারিতা হারাচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের পর বেশির ভাগ অ্যান্টিবায়োটিকেরই কার্যকারিতা থাকবে না। তাহলে আমরা কী করতে পারি?
ডা. রহমান: আসলে এ অবস্থাটা আরও খারাপ হয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০৫০ সালের কথা বলেছে। কিন্তু দুই বছর আগে করোনা মহামারির সময় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে এর আগেই ঘটনাটি ঘটে যাবে। এর কিছু সমস্যা আছে। যেমন একদিকে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের প্রচলিত যে অ্যান্টিবায়োটিকগুলো আবিষ্কার করা হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে বেঁচে থাকার সামর্থ্য অর্জন করছে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসগুলো। উল্টোদিকে বিজ্ঞানীরা ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস বা ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছেন। ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সম্পর্কে আমাদের যে জানাশোনা, সেই অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে যত ধরনের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে, সে-সম্পর্কে জেনে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করা দরকার ছিল। কিন্তু পাঁচ-সাত বছরের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করা যাবে, সেই সম্ভাবনা খুবই কম। এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে এবং বিজ্ঞানী মহল থেকে আগাম সতর্কতা দেওয়া হচ্ছে, ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে যে সঞ্চিত অস্ত্র ছিল, সেগুলোর বিরুদ্ধেও তারা বেঁচে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের পাইপলাইনে, মানে পাঁচ-সাত বছরের মধ্যে ওষুধ আবিষ্কারের সম্ভাবনা সর্বোচ্চ দুই-তিনটির বেশি নয়।