চট্টগ্রামে অবৈধ ব্যাংকিং: কপাল পুড়ছে স্বল্প আয়ের মানুষের
জীবদ্দশায় প্রদ্যোৎ দত্তের হালিশহরে ছোট একটি স্টুডিও দোকান ছিল। তিন মেয়ে তাঁর। তিল তিল করে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন। টাকাগুলো এক যুগের বেশি সময় ধরে পাড়ার একটি সমবায় সমিতিতে জমা রেখেছিলেন। জমতে জমতে তা ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়।
কিন্তু অনস্টেইজ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামের প্রতিষ্ঠানটি ২০ জুলাই রাতারাতি বন্ধ করে পালিয়ে যান উদ্যোক্তারা। এত টাকার সঞ্চয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন প্রদ্যোৎ দত্ত। তাঁর স্ত্রী মিনু দত্ত জানান, সমবায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ১২ আগস্ট তিনি মারা যান।
অনস্টেইজ সমিতি বন্ধ হওয়ার খবরে প্রদ্যোৎ দত্তের মতো স্ট্রোক করে পঙ্গু হয়ে গেছেন শেফালী দেবনাথ। সর্বস্বান্ত হয়েছেন এ রকম ২ হাজার ১০০ গ্রাহক। গ্রাহকেরা সবাই দক্ষিণ মধ্য হালিশহর বন্দর ১ নম্বর সাইড এলাকার বাসিন্দা। তাঁরা সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। কেউ পোশাকশ্রমিক, কেউ ক্ষুদ্র দোকানি, কেউ বাসাবাড়িতে কাজ করেন, আবার কেউ দিনমজুর।
বেশি টাকা লাভের আশায় এবং ব্যাংকের ঝামেলা এড়াতে তাঁরা ঘরের কাছের সমবায় প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখেছিলেন। এখন সারা জীবনের সঞ্চয় এক ধাক্কায় ‘নাই’ হয়ে গেল। ১০ কোটি টাকার বেশি আমানত নিয়ে পালিয়ে গেছে ১৩ বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠানটি। ক্ষুদ্রঋণ ও সঞ্চয়ের নামে অবৈধ ব্যাংকিং করে গত পাঁচ বছরে বন্দর ও ইপিজেড এলাকায় এ রকম অন্তত পাঁচটি সমবায় সমিতি হয় টাকা নিয়ে পালিয়েছে, নয়তো দেউলিয়া হয়ে গেছে।