এক কোটি পথচারীর অবকাঠামো উন্নয়নে বরাদ্দ মাত্র ০.২৪%
ঢাকার রাস্তায় প্রতিদিন যত মানুষ চলাচল করে, তার উল্লেখযোগ্য অংশই হেঁটে গন্তব্যে যায়। বর্তমানে প্রতিদিন নগরবাসী এক স্থান থেকে আরেক স্থানে গড়ে ৪ কোটি ২০ লাখ বার যাতায়াত (ট্রিপ প্রডিউস) করে। এ যাতায়াতের ২০ শতাংশই ঘটে পথচারী চলাচলে। এমন চিত্র উঠে এসেছে ২০১৫-২০৩৫ সালের জন্য প্রণীত সরকারের সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি)। তবে বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন পথচারী চলাচলের এ হার প্রায় ৩০ শতাংশ। এ দুই হিসাবকে আমলে নিয়ে দেখা যায়, রাজধানীতে প্রতিদিন এক কোটি বা তারও বেশিবার হেঁটে যাতায়াত করে পথচারী। রাজধানীর যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের যত বিনিয়োগ রয়েছে তার মধ্যে এ এক কোটি পথচারীর জন্য বরাদ্দ মাত্র দশমিক ২৪ শতাংশ।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর যাতায়াত ব্যবস্থায় পথচারীদের জন্য নেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। ফুটপাত যা আছে তার বেশির ভাগই হয় অবৈধ দখলে, নয়তো ব্যবহার অনুপযোগী। অধিকাংশ ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের জায়গাগুলো ভীষণ রকমের অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। পর্যাপ্তসংখ্যক ফুটওভার ব্রিজ, আন্ডারপাস ও ওভারপাস যেমন নেই, তেমনি এসব অবকাঠামোর গুণগত মান এবং অবস্থান নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাগুলোও পথচারীবান্ধব নয়। পথচারীর জন্য অবকাঠামো উন্নয়নে যে পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে তা তুলনামূলক যৎসামান্য। আবার প্রধান সড়কগুলোয় মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভারের মতো অবকাঠামো তৈরি করতে গিয়ে সংকুচিত করে ফেলা হচ্ছে পথচারীদের হাঁটার পথ।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তথ্য বলছে, ঢাকার রাস্তায় প্রতিদিন যত মানুষ চলাচল করে, তার ৩০ শতাংশ হেঁটে গন্তব্যে যায়। আর প্রতিদিন অন্তত আড়াই কিলোমিটার হাঁটে ৩৫-৪০ শতাংশ সড়ক ব্যবহারকারী। যদিও যোগাযোগ অবকাঠামোগুলো পথচারীবান্ধব না হওয়ায় পথচারীরাই দুর্ঘটনায় পড়ে বেশি। ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হয়, তার ৭১ দশমিক ৭২ শতাংশ পথচারী।