সারের ভর্তুকি কার পকেটে?
এটা কি আমরা জানি না বলতে পারি? আমরা তো আর মাঠের কৃষক নই। আমাদের জমিজিরেত সামান্য যা আছে সেগুলো তো বর্গা দেওয়া। বর্গার ফসল পেয়েছি কখনো এমনটা মনে নেই। কারণ বর্গাদার হচ্ছে আমাদেরই পরিবারের যারা পড়াশোনোয় পিছিয়ে পড়ে নিজেদের জমিজমা দেখভাল করে, তারাই। ফসলের কথা বললেই দাঁত কেলিয়ে হাসে কাক্কা, ওই ধান আপনাদের লাগবো? শুনেই লজ্জা পাই। আর কোনো কথা আসে না মুখে।
২.
রিপোর্ট পড়লাম কাগজে। সেই রিপোর্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ আপনাদের পড়ার জন্য তুলে দিচ্ছি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইউরিয়া এবং নন-ইউরিয়া উভয় মিলিয়ে ২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত ছয় অর্থবছরে সার খাতে মোট ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ৫৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭ হাজার ৪৭৩ কোটি, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬ হাজার ৭১৬ কোটি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ হাজার ৪২১ কোটি ও ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৪ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার ভর্তুকি দেওয়া হয়। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ১৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। (বণিক বার্তা/ ০৯/০৯/২৩)
সরকার তৃণমূলের কৃষকের জন্য তেমন কিছু করে না, এরকম একটি রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ধারণা শিক্ষিত ও মধ্যবিত্তের মনের মধ্যে গেঁথে আছে। সেটা থাকারই কথা। কারণ তারা তো গ্রামের ওই সব উৎপাদকের পাশে বাস করে। তারা তো চাষাদের অর্থনৈতিক সংকট সরাসরি দেখতে পায়। এমনকি সারের জন্য যখন কৃষক হাহাকার করে, যখন টাকা থাকতেও সার পাওয়া যায় না, তখন সেই হাহাকার বাড়তে থাকে এবং মফস্বল এলাকার রাজনীতিকদের কানে পৌঁছায়। সেই রাজনীতিকরা যদি সরকারি দলের হয়, তাহলে তারা বলবেন, হাহাকার কোথায়? ওরা তো মিথ্যামিথ্যি ওটা করে। আর বিরোধীদের মনে সেই হাহাকার ড্রামের শব্দের মতো এসে কানে লাগে। তখন তারা কৃষকের কান্নার শব্দে নিজেদের রাজনীতির উপাদান পেয়ে সোচ্চার হন রাজনৈতিক ময়দানে। কেননা, তারও তো খাদ্যশস্য দরকার।