‘আমাগো ঘরই নাই, মশারি টাঙামু কই’
রহিমন নেসার বয়স ৬৫ ছুঁই ছুঁই। দুই ছেলে রিকশা চালান। বিয়ে করে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন তারা। রাজধানীর মালিবাগে রাস্তার পাশে বস্তিতে ঠাঁই হয়েছে রহিমনের। সঙ্গে থাকেন বিধবা মেয়ে। মা-মেয়ে দুজনের থাকার ঘরে বিছানা বলতে দুই হাত প্রস্থের বাঁশের তৈরি খাটিয়া। ডেঙ্গুর প্রকোপের মধ্যে মশারি-কয়েল ছাড়াই দিন-রাত কাটে রহিমন নেসার।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মালিবাগ বস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, তিন নম্বর ঘরের সামনে বসে আছেন রহিমন। জানান, বস্তিতে মশা বেড়েছে। জ্বর-জারিও বেড়েছে সবার। তিনিও এক সপ্তাহ ভুগেছেন জ্বরে। মশারি ছাড়া থাকেন কীভাবে— এমন প্রশ্নে রহিমন বলেন, ‘আমাগো ঘরই নাই, মশারি টাঙামু কই?’
রহিমনের পেছনে ঘরের দরজা। ওপরে বাঁশ-কাঠের ছাউনিতে পুরোনো টিনের চালা। চারপাশ ঘেরা পলিথিন মুড়িয়ে। দরজাটাও বাঁশের। উঁকি দিতেই দেখা গেলো- ঘরে ওড়াওড়ি করছে মশা। পুরোনো-নোংরা জিনিসপত্রে ঠাঁসা পুরো ঘর। বামপাশে এক কোণায় বাঁশের তৈরি খাটিয়া। বড়জোর তিন ফুট প্রস্থ, দৈর্ঘ্য (লম্বা) হবে সাড়ে চার-পাঁচ ফুট। মা-মেয়ে মিলে বানিয়েছেন এ খাটিয়া। পাঁচ বছর ধরে তাতে দিনশেষে ক্লান্ত-শ্রান্ত শরীর এলিয়ে ‘শান্তির ঘুমে’ যান ৬৫ বছরের এ নারী।