২০১৪ সালে ভারত মঙ্গলগ্রহ অভিযানে ‘মঙ্গলযান’ নামের একটি মিশন পরিচালনা করেছিল। এর মধ্য দিয়ে সে বছর ভারত এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে নিজের উপস্থিতির জানান দিয়েছিল। ভারত যখন মঙ্গলযানের সাফল্য উদ্যাপন করছিল, ঠিক সেই সময় নিউইয়র্ক টাইমস একটি কার্টুন ছাপিয়েছিল।
সেই কার্টুনে দেখা যাচ্ছিল, কেতাদুরস্ত পশ্চিমা সাহেবরা ‘এলিট স্পেস ক্লাব’ নামের একটি লাউঞ্জে বসে আছেন; আর পাগড়ি পরা এক গেঁয়ো কৃষকরূপী ভারত একটি গরু নিয়ে সেই লাউঞ্জে ঢোকার জন্য দরজায় কড়া নাড়ছে।
এটি ছিল পশ্চিমের সরাসরি খবরদারি করা ও বর্ণবাদী আচরণের প্রকাশ। নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর ওই কার্টুন নিয়ে সে সময় ভারতের মানুষ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল।
এখন ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান-৩ নামের একটি নভোযান পাঠিয়েছে। ভারতই প্রথম কোনো দেশ যে কিনা চাঁদের এই অঞ্চলে সফলভাবে তার নভোযান অবতরণ করাতে সক্ষম হয়েছে।
এই ঘটনায় নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর সেই কার্টুনের পাল্টা জবাব হিসেবে ভারতীয়রা একটি কার্টুন ছেপেছে। এবারের কার্টুনে দেখা যাচ্ছে, ‘মুন সাউথ পোল’ নামের একটি ঘরের ভেতরে সেই পাগড়িধারী কৃষকরূপী ভারত তাঁর গরুটি নিয়ে বসে আছে, আর বাইরে আমেরিকান রাশিয়ান এবং অন্যান্য দেশের অভিজাত লোকেরা হাতে রকেট নিয়ে দরজায় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং ভেতরে আসার জন্য তারা ভারতের অনুমতি চাইছে।
সংগত কারণেই ভারতীয়রা তাদের মহাকাশ কর্মসূচি নিয়ে গর্ববোধ করছেন। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী দেশ ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে তার সীমান্ত ভাগাভাগির ও স্বাধীনতা লাভের বছর ১৯৪৭ সালে আহমেদাবাদে ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি গড়ে তুলেছিল।
ভারতের দূরদর্শী প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ১৯৬২ সালে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কমিটি ফর স্পেস রিসার্চ (ইনকসপার) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর মধ্য দিয়ে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে মহাকাশ অভিযানে যুক্ত হয়েছিল। ইনকসপার ১৯৬৯ সালে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন বা ইসরোয় রূপান্তরিত হয়।
- ট্যাগ:
- মতামত
- চাঁদে মহাকাশযান
- ভারত