ব্যাংকিংসেবা গ্রহণের বিপদ এবং আপদ
বর্তমান আধুনিক যুগে ব্যাংকের সেবা ছাড়া আমাদের একদিনও চলে না। টাকা জমা রাখা, প্রয়োজনের সময় টাকা উঠানো, ঋণ গ্রহণ করা, চেকের মূল্য কালেকশন করা, বৈদেশিক মুদ্রা কেনা ও বেচাসহ আরও বহু ধরনের সেবা ব্যাংকের কাছ থেকে নিতে হয়। কিন্তু ইদানীং ব্যাংকে হিসাব পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের নানা ধরনের বিপদ এবং আপদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমরা সাধারণভাবে এক কথায় আপদ-বিপদ অথবা বিপদ-আপদ (বিপদাপদ) বলে থাকি। এই বিপদ এবং আপদের ভেতর কিছু সামঞ্জস্য আছে, কিছু পার্থক্যও আছে। অনেক সময় বিপদ সহ্য করা যায়, কিন্তু আপদ সহ্য করা যায় না। বাড়ির সর্বস্ব চুরি হয়ে যাওয়ার নাম বিপদ। আবার নিজের ছোট বাসায় অনাহুত অতিথি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলে আসার নাম আপদ। বিপদ এবং আপদের বিষয়ে অভিধান কী বলছে একটু দেখে নিই। বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধান ‘বিপদ’ শব্দের অর্থ লিখতে গিয়ে লিখেছে, ‘বিপত্তি, দুর্দশা, দুরবস্থা, ঝঞ্ঝাট’। আবার ‘আপদ’-এর অর্থ লিখেছে, ‘বিরক্তিকর ব্যক্তি, বস্তু, বিষয় এবং দুর্গতি’।
এখন ব্যাংকিং খাতের বিপদ এবং আপদ বলতে আমরা কী বুঝি? প্রথমেই আসা যাক হিসাব খোলার বিষয় নিয়ে। আমরা প্রয়োজন অনুসারে বাসস্থানের বা ব্যবসাস্থলের কাছের কোনো ব্যাংক শাখায় হিসাব খুলতে যাই। সে ক্ষেত্রে ব্যাংকের কয়েক পৃষ্ঠার একটি ফরম পূরণ করার পাশাপাশি নানা ধরনের কাগজপত্র দাখিল করতে হয়। এসব কাগজ দাখিলের কেতাবি নাম হচ্ছে কেওয়াইসি বা কহড়ি ুড়ঁৎ ঈঁংঃড়সবৎ। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গ্রাহকের যথাযথ পরিচয় নিতে বলা হলেও ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত সচেতন হয়ে গ্রাহকের জন্য কষ্টসাধ্য হওয়া সত্ত্বেও নানা ধরনের কাগজপত্র চেয়ে থাকে। একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। হিসাব খোলার জন্য গ্রাহককে ইউটিলিটি বিল জমা দিতে হয়। যিনি কারও বাড়িতে ভাড়া থাকেন তার পক্ষে ইউটিলিটি বিলের কপি জমা দেওয়া কঠিন এবং অর্থহীন। এর চেয়ে গ্রাহক সম্পর্কে বিভিন্নভাবে খোঁজখবর নেওয়াই অধিকতর যুক্তিযুক্ত।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ব্যাংকিং
- ব্যাংকিং খাত
- ব্যাংকিং সেবা