শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ৩৯ ওভারে ১৬৫/৫, লক্ষ্য ১৬৫ (দাসুন শানাকা ১৪*, চারিথ আসালাঙ্কা ৬২*; ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ২, সাদিরা সামারাবিক্রমা ৫৪, কুশল মেন্ডিস ৫, পাথুম নিসাঙ্কা ১৪, দিমুথ করুনারত্নে ১)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে জয়ী।
বাংলাদেশ: ৪২.৪ ওভারে ১৬৪/১০ (শরিফুল ২*; মোস্তাফিজুুর ০, তাসকিন ০, শান্ত ৮৯, শেখ মেহেদী ৬, মিরাজ ৫, মুশফিক ১৩, হৃদয় ২০, সাকিব ৫, নাঈম ১৬, তানজিদ তামিম ০)
এশিয়া কাপ অভিযানে শুরুতেই হারের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অন্যতম আয়োজক শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ হেরেছে উইকেটে।
ক্যান্ডিতে ১৬৫ রানের মামুলি লক্ষ্য দিলেও স্বাগতিকদের সহজে জিততে দেয়নি বাংলাদেশ। তবে এটা বোঝা গেছে স্কোরবোর্ডে আরও কিছু রান থাকলে লঙ্কানদের পক্ষে এই ম্যাচ জেতাটা কঠিন হয়ে যেত। পাল্লেকেলের কঠিন উইকেটে এই স্কোর পার করতেই তাদের চাপের মাঝে থাকতে হয়েছে। কারণ মামুলি লক্ষ্যের পর যেমন শুরুর দরকার ছিল সেটা এনে দেন দুই পেসার তাসকিন ও শরিফুল। ১৫ রানে ফেরান দুই ওপেনারকে। তারপর ৪৩ রানে কুশলকে ফিরিয়ে মোমেন্টাম এনে দিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কা। কারণ এই জুটির ওপর কোনও চাপই বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে পারেনি। মেহেদী সামারাবিক্রমাকে শেষ দিকে আউট করে জুটি ভেঙেছেন। পরের ওভারে নতুন ব্যাটার ধনাঞ্জয়াকে ফিরিয়ে সাকিবও চাপ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে জয়ের কাছেই ছিল লঙ্কান দল। আসালাঙ্কা ফিফটি ছুঁয়ে শানাকাকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলেন ৩৯ ওভারে।
২৯ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। একটি করে নেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও শেখ মেহেদী।
সামারাবিক্রমাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন মেহেদী
৪৩ রানে তিন উইকেট তুলে শ্রীলঙ্কাকে চাপে ফেলতে পেরেছিল বাংলাদেশ। তার পর অবশ্য উইকেটের দেখা পায়নি। সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কা জুটির সামনে অসহায় হয়ে থেকেছে। এই জুটি-ই চাপ কাটিয়ে ধীরে ধীরে ম্যাচটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন সামারাবিক্রমা। ৭৮ রানের জুটি অবশেষে ভেঙেছেন শেখ মেহেদী। সামারাবিক্রমাকে স্টাম্পড করিয়েছেন ২৯.১ ওভারে। লঙ্কান ব্যাটার এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। ৭৭ বলে ৬ চারে ৫৪ রান করেছেন সামারাবিক্রমা
ব্যর্থ রিভিউ বাংলাদেশের
১৪.৫ ওভারে রিভিউ নিয়েও সফল হয়নি বাংলাদেশ। সাকিবের বলে আসালাঙ্কা গ্লাভসবন্দি হয়েছে বলে মনে করেছিল বাংলাদেশ। জোরালো আবেদনে পর তারা রিভিউ নিলে দেখা গেছে প্যাডে লাগার আগে বল কোথাও স্পর্শই করেনি। আলট্রা এজেও দেখা যায় সরল রেখা।
তাসকিন-শরিফুলের আঘাতের পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় ছিল কুশল মেন্ডিস-সাদিরা সামারাবিক্রমা জুটি। মেন্ডিস টেস্ট মেজাজেই খেলছিলেন। অপর দিকে রান তুলছিলেন সামারাবিক্রমা। পেসাররা এই জুটিকে বিপদে ফেলতে না পারলেও বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় ওভারেই আঘাত হানেন অধিনায়ক সাকিব। বামহাতি অলরাউন্ডারর আর্ম বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন মাত্র ৫ রানে।
তাসকিনের পর আরেক ওপেনারকে বিদায় দিলেন শরিফুল
ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বল হাতে সেটা পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে বাংলাদেশ। ছোট লক্ষ্য দিলেও সেটা কঠিন করে তুলতে শুরুতেই দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের কাঁপিয়ে দিয়েছেন তাসকিন-শরিফুল। তাসকিনের আঘাতের পরের ওভারে উইকেট উৎসবে যোগ দেন শরিফুল। ১৪ রান করা পাথুম নিসাঙ্কা শরিফুলের অনেক বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে এজ হয়ে মুশিফকের গ্লাভসে জমা পড়েছেন।
শুরুতেই তাসকিনের আঘাত
১৬৫ রানের মামুলি লক্ষ্য ছুঁড়ে দিলেও শুরুতেই লঙ্কান ইনিংসে আঘাত হেনেছেন তাসকিন আহমেদ। তৃতীয় ওভারে তার দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে দলের ১৩ রানে বোল্ড হয়েছেন দিথুম করুনারত্নে। তাসকিনের ভেতরে ঢুকে পড়া বল খেলতেই পারেননি তিনি।
লঙ্কানদের বোলিং দাপটে ১৬৪ রানে অলআউট বাংলাদেশ
ক্যান্ডিতে মূল বোলারদের ছাড়াই বাংলাদেশের বিপক্ষে এশিয়া কাপ অভিযানে নেমেছিল শ্রীলঙ্কা। বলা হচ্ছিল খর্ব শক্তির বোলিং। কিন্তু সেই বোলিং দিয়েই বাংলাদেশকে ১৬৪ রানে বেঁধে ফেললো টুর্নামেন্টের অন্যতম আয়োজকরা। তাতে সাকিব আল হাসানের শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ হলো। ৩৬ রানে তিন উইকেট পড়ার পর লড়াই করার মতো সামর্থ্য দেখিয়েছেন শুধু তাওহীদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫৯ রান যোগ করেন তারা। তার পর মুশফিক শান্তর কিছুক্ষণের সঙ্গী হলেও আদতে ওই জুটি ভাঙাই কাল হয়ে দাঁড়ায় লাল-সবুজদের। লঙ্কানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে রানই তুলতে পারছিল না। এই চাপ কাটাতে গিয়েই বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। একার লড়াইয়ে শুধু শান্তই সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেছেন।
৩২ রানে পেসার পাথিরানা ৪ উইকেট নিলেও অফস্পিনার মাহিশ থিকশানাকেই বেশি কৃতিত্ব দিতে হবে। ৮ ওভারের স্পেলে কৃপণ ছিলেন একমাত্র তিনি। ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন দুটি উইকেট।
একটি করে উইকেট নেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, দুনিথ ভেল্লালাগে ও দাসুন শানাকা।