বঙ্গবন্ধু হত্যা: জাতির বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ
১৯৭৬ সালের ২ আগস্ট। যুক্তরাজ্যের গ্রানাড টেলিভিশনে প্রচার হয় ‘ওয়ার্ল্ড ইন অ্যাকশন’ নামের একটি অনুষ্ঠান। এতে সাংবাদিক এ্যান্থনী ম্যাসকারেনহাস সাক্ষাৎকার নেন মেজর ফারুক ও তার ভায়রা-ভাই মেজর রশীদের। সাক্ষাৎকারে তারা স্বীকার করেন, বঙ্গবন্ধুকে শাসনক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করার জন্য পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করা হয়।
এই তথ্য উল্লেখ করে আবদুল মতিন ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা’ গ্রন্থে টিভি সাক্ষাৎকারটির পূর্ণ বিবরণ তুলে ধরেছেন।সাক্ষাৎকারে মেজর রশীদ দাবি করেন, ‘মুজিব তাঁর শাসনামলে সবাইকে দুর্নীতি করার সুযোগ দেন এবং কারো বিরুদ্ধে তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। আওয়ামী লীগের সদস্যরা যেসব অমানবিক ও অসহ্য অপরাধের জন্য দায়ী সে ব্যাপারে তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।’মেজর রশীদ ও ফারুকের বিশ্বাস, মুজিব থাকলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই দেশ ও দেশবাসীর মঙ্গলের জন্য মুজিবকে যেতেই হবে। কিন্তু তাঁকে শুধু ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিলে হবে না। চিরতরে দুনিয়া থেকে বিদায় করতে হবে। কারণ, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে জনগণকে সংগঠিত করবেন, জনগণ ক্ষেপে উঠবে। এতে মেজর ফারুক ও রশীদের উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে না।কিলিং মিশন কার্যকরের আগে মেজর ফারুক এ বিষয়ে শরণাপন্ন হন সে সময়ের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ পদধারী মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের। জিয়া এ ব্যাপারে জড়িত হতে চান না জানিয়ে বলেন, ‘তোমরা জুনিয়র অফিসাররা যদি কিছু করতে চাও তাহলে নিজেরাই কাজটি করা উচিৎ হবে।’জিয়ার মৌন সমর্থন পাওয়ার পর মেজর রশীদ খন্দকার মোশতাক আহমদের শরণাপন্ন হলেন।