আমরা না পারলেও সামুদ্রিক সিলরা সামাজিক দূরত্বের চর্চা করে
সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী সিলদের নিয়ে নতুন এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, যা শুনলে চমকে যেতে হয়। আমরা বা আমাদের বন্ধুদের অনেকেই হয়তো করোনা মহামারির সময় সামাজিক দূরত্ব মানতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। করোনা মহামারির সময় জোর করে মানুষকে সামাজিক দূরত্ব মানার কতই না প্রচেষ্টা দেখেছি। আমরা সামাজিক দূরত্বের চর্চা না করলে কী হবে, সামুদ্রিক সিলরা নাকি এই কাজ করতে জানে অনেক আগে থেকে। গবেষকেরা প্রকৃতিতে সামুদ্রিক সিলদের মধ্যে সামাজিক দূরত্বচর্চার প্রবণতা খেয়াল করেছেন। নর্থ সিতে সিলদের গতিপ্রকৃতি বুঝে এমনটাই বলছেন তাঁরা।
রয়েল সোসাইটিতে এক গবেষণাপত্রে এই আচরণকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন গবেষকেরা। ধূসর ও হারবার সিলদের নিয়ে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। গবেষণায় দেখা যায়, হারবার প্রজাতির সিল অন্য প্রাণীদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলে। রয়েল নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর সি রিসার্চ ও ওয়েজেনিনজেন মেরিন রিসার্চের গবেষক জোরিওন হোয়েকেনডিজক জানান, ‘আমরা দুটি প্রজাতির ওপর পরীক্ষা চালিয়েছি। আমরা দেখেছি, এই দুই ধরনের সিল কলোনির মতো করে বাস করে। ধূসর সিলরা অন্য সব প্রাণীর থেকে দূরত্ব বজায় রেখে থাকার চেষ্টা করে। বার্ড ফ্লু রোগের জন্য প্রাণীরা কিছুটা শঙ্কায় থাকে বলে তারা এমনটা করতে পারে।’
ডাচ ওয়াডেন সমুদ্রের সিলদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে নজর রাখছেন গবেষকেরা। এই সমুদ্রতীরে সিলরা অবাধ বিচরণ করে। বিশ্রাম থেকে শুরু করে বাচ্চা প্রসব আর সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য এই সমুদ্রতটে দেখা যায় তাদের। এখানে সাড়ে ছয় হাজার ধূসর সিল দেখা যায়, যেখানে আট হাজারের মতো হারবার সিলের দেখা মেলে। বিভিন্ন স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা ছবির মাধ্যমে এই প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করেছেন তাঁরা।
হারবার সিল গেল কয়েক বছরে বেশ কিছু মহামারির মুখে পড়েছে। ফোসিন ডিসটেম্পার ভাইরাসের কারণে তাদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। ১৯৮৮ আর ২০০২ সালে অনেক হারবার সিল মারা যায়। ডিসটেম্পার ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮৮ সালে ইউরোপে ১৮ হাজার সিল মারা যায়। এই ভাইরাসে অবশ্য ধূসর সিলের তেমন ক্ষতি হয়নি। গবেষকেরা জানিয়েছেন, অনেক ধূসর সিল ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, কিন্তু তারা হারবার সিলের মতো অসুস্থ হয় না।
- ট্যাগ:
- জটিল
- সামাজিক দূরত্ব
- সামুদ্রিক সিল