আর্থিক খাতের দুর্বলতা অশনিসংকেত
ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ছিলেন, ছিলেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক। এ ছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থ পাচার, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংকট, মূল্যস্ফীতি ও অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে।
প্রথম আলো: আলোচিত বিষয় নিয়েই শুরু করি। বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে এখন। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, কয়েক বছর ধরেই কোটি কোটি ডলার পাচার হচ্ছে। এসব অভিযোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু পরিস্থিতির কোনো উন্নতি কি দেখতে পাচ্ছেন?
মুস্তফা কে মুজেরী: দেখুন, অর্থ পাচার বা মানি লন্ডারিংয়ের সঠিক পরিসংখ্যান হয়তো আমরা জানি না। কিন্তু যতটুকু যা সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়, অ্যানেকডোটাল এভিডেন্স, তাতে দেখা যায় এর পরিমাণ অনেক বেশি। কেউ কিন্তু অস্বীকার করেন না যে অর্থ পাচার হচ্ছে। এটা একটা বৈশ্বিক সমস্যাও। প্রশ্ন হলো, আমরা কি এটা বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছি? মানি লন্ডারিং বন্ধ করার জন্য আমাদের আইন আছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানও আছে। কিন্তু এগুলোর বাস্তবায়ন নেই। অর্থ পাচার তখনই ঘটে, যখন বিভিন্ন ফাঁকফোকর থাকে। যাঁদের টাকা আছে, ক্ষমতা আছে, তাঁরাই এটা করতে পারেন। ক্ষমতা না থাকলে এটা করা যাবে না।
প্রথম আলো: এ ক্ষমতার উৎস কী?
মুস্তফা কে মুজেরী: আমি দুটি উৎসের কথা বলতে পারি। একটা হলো, আর্থিক সংগতি। অর্থাৎ আমার অর্থ থাকলেই কেবল আমি টাকা পাচার করতে পারি। আরেকটি হলো ক্ষমতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা। ফাঁকফোকরগুলো বন্ধ না করে আমরা যতই কড়া আইন করি না কেন, যদি প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী না করি, তাহলে এটা চলতে থাকবে।
প্রথম আলো: অর্থ যারা পাচার করছে, তাদের শাস্তি হয়েছে, এমন উদাহরণ বিরল। গণমাধ্যমে তাদের অনেকের নাম এসেছে, পানামা পেপারসে কারও কারও নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কি খুব কঠিন?
মুস্তফা কে মুজেরী: হ্যাঁ, এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তথ্য সম্পূর্ণ না হলেও কিছু তো পাওয়া গেছে। কানাডার বেগমপাড়ার কথা আছে। এরা চিহ্নিত একবারে হয়নি, তা-ও বলব না। কিন্তু এরপর কী হয়েছে? আমরা মাঝপথে থেমে গেছি।