প্রসব-পরবর্তী বিষণ্নতা চিকিৎসায় ভালো হয়
প্রশ্ন: আমার চাচাতো বোনের বয়স ১৯ বছর। তার এক বছর বয়সী একটি সন্তান আছে। গ্রামে তার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে বসবাস করে। সন্তান জন্মের পর থেকে তার মধ্যে কিছু মানসিক অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। নিজের সন্তানকে কোলে নিতে চায় না। দিন দিন অস্বাভাবিক আচরণ বাড়ছে। সন্তানকে কোলে দিতে গেলে চিৎকার করে, ভয় পায় এবং আঘাত করার চেষ্টা করে। নিজেকেও আঘাত করে। গ্রামের মানুষজনের ধারণা, তাকে জিনে ধরেছে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না; বরং অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে। আমরা তাকে ডাক্তার দেখাতে চাইছি। কিন্তু কীভাবে কী করব বুঝতে পারছি না। পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করলে উপকৃত হব।
সমাধান: আপনার চাচাতো বোনের যে সমস্যার
কথা বলেছেন, রোগের উপসর্গ পড়ে
ধারণা করছি, তিনি পোস্ট পার্টাম সাইকোসিস বা প্রসব-পরবর্তী গুরুতর মানসিক রোগে ভুগছেন।
এই রোগ হলে রোগীর বদ্ধমূল
বিশ্বাস হয়—
» তাঁর সন্তান ত্রুটিপূর্ণ, বিকলাঙ্গ এবং সন্তানটি তাঁর জন্য ক্ষতিকর।
» রোগীরা কখনো কখনো সন্তানকে অশুভ কিংবা সবার জন্য ভয়াবহ মনে করেন।
» রোগীরা বিশ্বাস করেন, সন্তানটি তাঁর ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
» এই বিশ্বাসের কারণেই মা একপর্যায়ে তাঁর সন্তানের কোনো যত্ন নেন না, কোলে নেন না, এমনকি নিজের সন্তানকে হত্যাও করে ফেলেন!
এই মানসিক রোগ এতই গুরুতর যে মা তাঁর শিশুকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন বা মেরে ফেলেন। এ জন্যই অনেকে মনে করে থাকেন, রোগীকে হয়তো জিন-ভূতে ধরেছে। এই রোগের বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় আপনার বোনের চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবারের মানুষেরা কবিরাজের সাহায্য নিচ্ছেন। শুধু গ্রামে নয়, শহরেও এই মানসিক রোগের ব্যাপারে অনেকের হয়তো ধারণা নেই।
প্রথমেই বলব, এটি যে গুরুতর মানসিক রোগ, সেটি পরিবারের সবাইকে জানাতে হবে। রোগীর সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আপনার বোনের কাছ থেকে তাঁর সন্তানটিকে দূরে, অন্য কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে রাখতে হবে।
আপনার বোন সঠিক চিকিৎসা পেলে আশা করা যায় সুস্থ হবেন।
- ট্যাগ:
- স্বাস্থ্য
- পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন