বিয়ের পর পড়তে পারেননি, ৫৪ বছর বয়সে করলেন এসএসসি পাস
পড়াশোনার পাট চুকিয়েছেনে সেই ১৯৮৮ সালে। তখন তিনি দশম শ্রেণির ছাত্রী। হঠাৎ ভালো পাত্র পেয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন বাবা। এরপর কয়েকবার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির চাপে শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। শেষ পর্যন্ত মনের জোর এবং স্বজনদের উৎসাহে পড়াশোনা করে এবার এসএসসি পাস করেছেন শাম্মী আক্তার।
শাম্মী আক্তারের বাড়ি খুলনা নগরের করিমনগর এলাকায়। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গতকাল সোমবার তিনি জিপিএ ৩.৮২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনোর খবরে তাঁর পরিবারে যেন আনন্দের বন্যা বইছে। নিজেও যেমন খুশি হয়েছেন, তেমনি তাঁর স্বামী, ছেলে, ছেলের স্ত্রীও খুশি হয়েছেন।
নতুন করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি মোটেও সুখকর ছিল না শাম্মী আক্তারের। ২০১৯ সালে ছেলে ও স্বামীর উৎসাহে নতুন করে পড়াশোনা করার আগ্রহ জাগে তাঁর। ওই বছর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে খুলনা নগরের ইকবাল নগর বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। দুই মাস সেখানে ক্লাসও করেন। পরে ওই বিদ্যালয়ের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসির কোর্সটি বাতিল হয়ে যায়। তাঁকে বদলি করা হয় পাশের বি কে ইউনিয়ন ইনস্টিটিউটে। কিন্তু পরে জানতে পারেন তাঁর ভর্তি বাতিল হয়ে গেছে। একপর্যায়ে হতাশ হয়ে পড়াশোনার আশা ছেড়ে দেন তিনি।
শাম্মী আক্তার বলেন, ২০২১ সালে মুঠোফোনে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের পাঠানো খুদে বার্তায় আবার ভর্তি হওয়ার কথা জানতে পারেন। বাড়ির কাউকে না জানিয়ে লুকিয়ে টাকা জোগাড় করে আবার এসএসসি প্রোগ্রামে ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার পর প্রথম দিন বাড়িতে বই নিয়ে আসেন লুকিয়ে। পরে স্বামী ও সন্তানকে জানিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। প্রতি শুক্রবার ক্লাস করতেন, করেছেন কোচিংও। রাত জেগে পড়াশোনাও করেছেন। তাঁর পড়াশোনায় সহযোগিতা করতেন স্বামী-সন্তানেরা।
- ট্যাগ:
- জটিল
- এসএসসি
- পরীক্ষায় পাশ