দেশের সড়কপথে নিরাপত্তাহীনতা যখন প্রায় নৈমিত্তিক ঘটনা, তখন কনটেইনারচাপায় ‘দুর্ঘটনা’ নূতন মাত্রা যুক্ত করিয়া চলিতেছে। এটা ঠিক, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় শনিবার সকালে কনটেইনারচাপা পড়িয়াও একটা ব্যক্তিগত গাড়ির পাঁচ যাত্রী বলিতে গেলে অলৌকিকভাবে বাঁচিয়া গিয়াছেন। পতিত কনটেইনারটির একটা অংশ সড়ক বিভাজকের সহিত আটকাইয়া থাকিবার কারণে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ির ভিতর সামান্য ফাঁকা অংশে দুই শিশুসহ তাহাদের পিতা, মাতামহ ও চালক প্রাণ হাতে ধরিয়া টিকিয়া ছিল।
নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ হইতে ফিরিয়া আসা পরিবারটির প্রতি আমাদের সমবেদনা ও শুভকামনা নিশ্চয় রহিয়াছে। একই সঙ্গে এই প্রশ্নও তুলিতে হইবে, সাম্প্রতিককালে এই প্রকার দুর্ঘটনার হার বৃদ্ধি পাইতেছে কেন? জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহেও চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর এলাকায় কনটেইনারচাপা পড়িয়া একজন পুলিশ কনস্টেবল নিহত হইয়াছেন। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় একইভাবে নিহত হইয়াছিলেন রিকশা আরোহী পিতা-পুত্র।
কনটেইনারচাপা পড়িয়া প্রাণহানির যেই বীভৎসতা, উহার সহিত অন্য কোনো সড়ক দুর্ঘটনার তুলনা কঠিন বটে। কিন্তু এইরূপ ‘ভারী’ দুর্ঘটনা লইয়া সংশ্লিষ্টদের বিশেষত কনটেইনারবাহী লরির চালক এবং সড়কে শৃঙ্খলার দায়িত্বপ্রাপ্তদের হালকা সতর্কতাও দৃশ্যমান নহে।
সর্বসাম্প্রতিক তিন দুর্ঘটনা এই প্রশ্নের মুখেও আমাদের দাঁড় করাইয়া দেয়– চট্টগ্রাম এলাকাতেই অঘটনগুলি অধিক ঘটিতেছে কেন? হইতে পারে, চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করিয়া কনটেইনার চলাচলের হার দেশের অন্য কোনো অঞ্চল হইতে অধিক। তাহা হইলে তথায় কনটেইনারবাহী যানবাহন চলাচলে অধিকতর সতর্কতা কি বিদ্যমান? জুলাই মাসের দুর্ঘটনায় দেখা গিয়াছিল, চালকের পরিবর্তে লরিটি চালাইতেছি
তাহার সহকারী!
- ট্যাগ:
- মতামত
- সড়ক দুর্ঘটনা
- ঝুঁকি