মাকে আমার এনে দাও
মা। ছোট্ট একটি শব্দ, কিন্তু কী বিশাল তার ব্যাপ্তি। আকাশের চেয়ে বিশাল তার বিস্তৃতি। এই একটি শব্দের মধ্যেই পাওয়া যায় মানবজাতির উৎসের সন্ধান। শিল্পী নির্মলা মিশ্রের সেই জনপ্রিয় গান—
ও তোতা পাখি রে
শিকল খুলে উড়িয়ে দেবো
মা কে যদি এনে দাও
আমার মা কে যদি এনে দাও
ঘুমিয়ে ছিলাম মায়ের কোলে
কখন যে মা গেলো চলে
সবাই বলে ওই আকাশে
লুকিয়ে আছে খুঁজে নাও
ও তোতা পাখি রে...
প্রতিটি মাতৃহারার অন্তরের হৃদয়-নিঃসৃত হাহাকার এবং ক্রন্দনের ভাষা এক, একই আবেগ, বেদনার সব রংই বোধহয় একই। আবার কিছু কিছু অবয়ব আছে, যেখানে চোখ পড়লেই মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। সেসব মুখ পুরোটাই মমতায় মোড়া। নরম মিষ্টি হাসি ছড়িয়ে যখন মায়াময় বাক্য নিঃসৃত হয় ওই কণ্ঠ থেকে, তখন মনে হয় পৃথিবীতে এর চাইতে মধুরতম সংগীত বুঝি আর নেই। মা মানেই স্নেহের সুশীতল ছায়া।
আমার এই অনুভূতি হতো বেগম সুফিয়া কামালের ক্ষেত্রেও। আমার মায়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন তিনি। আমার কৈশোর বেলায় বিকেলে খেলতে খেলতে হঠাৎ হঠাৎ ছুটে আসতাম মায়ের ঘরে। দেখতাম মা তার ঘরে খাটের ওপর বসে হয় কিছু সেলাই করছেন কিংবা কারও সঙ্গে গল্প করছেন। মাঝেমধ্যে বেগম সুফিয়া কামাল আসতেন মায়ের সঙ্গে গল্প করার জন্য। দুজনের চেহারা ও গড়নে অদ্ভুত সাদৃশ্য! আমি দুয়েকবার ভুল কোলে মাথা রেখে একই মমতামাখা স্পর্শ অনুভব করেছি। অনেক পরে মাতৃস্নেহ কিঞ্চিৎ পেয়েছিলাম শহীদ জননী জাহানারা ইমামের কাছ থেকে। তবে তা স্বল্প সময়ের জন্য। কারণ, যখন তার সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হয়, তখন তিনি শহীদ জননী হিসেবে অগণিত সন্তানের মা।
এবার আর এক মায়ের কথা বলি।