বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর
একটি পরাধীন জাতির জন্য স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখা স্বাভাবিক। কোনো মানুষই পরাধীন থাকতে চায় না। পরাধীনতার শৃঙ্খলে যে আটকা পড়েছে, সেই বুঝতে পারে পরাধীনতার যন্ত্রণা কত ভয়াবহ ও দুঃসহ। পরাধীন বাঙালিকে যে মহামানব স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন এবং সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেছিলেন তার নাম শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অসম সাহসী একজন মুক্তির দূত। তিনি পরাধীন বাঙালিকে মুক্তি দিতে নিজের জীবনবাজি রেখেছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে নিজের প্রাণবিসর্জন দিয়ে জাতিকে মুক্তি দেওয়ার মতো নেতা হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র আছেন, তাদের মধ্যে শেখ মুজিব একজন। সেজন্যই বাঙালি জাতি তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেছে। তিনি হয়েছেন জাতির পিতা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস কালে কালে খণ্ডিত হয়েছে। অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে যার যার সুবিধামতো সে সে নতুন ইতিহাস লিখতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেনি; কিন্তু সত্য এমন এক অমোঘ শক্তি, যাকে কেউ কোনোদিন শেষ করতে পারেনি। শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে কতখানি ভূমিকা রেখেছিলেন, তা কমবেশি সব বাঙালিই জানেন। সেই বহুল চর্চিত ইতিহাসকেই আবার নতুন করে পাঠককে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য আজ কলম ধরেছি। আশা করি, নবীন-প্রবীণ পাঠক সমাজ আমার এ লেখার সঙ্গে একমত পোষণ করবেন। এখানে আমি ব্যক্তিগত কোনো কাল্পনিক সত্য পরিবেশন করব না-ঐতিহাসিকভাবে যা সত্য, তাকেই তুলে ধরার চেষ্টা করব মাত্র।
ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবে বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রোথিত থাকলেও তা নিয়ে যথেষ্ট অস্পষ্টতা ছিল। কেউ-ই সেই মুহূর্তে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার সাহস পাননি। সেই সময় সেটা দেখা সম্ভবও ছিল না; কিন্তু ১৯৭০ সালের নির্বাচন বাংলাদেশের স্বপ্নকে যেন নতুন করে সবার চোখে দোলা দিয়ে যায়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিব সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হয়ে যখন পাকিস্তানের ক্ষমতায় বসার যোগ্যতা অর্জন করলেন, তখন দেখা গেল পাকিস্তানি শাসক-শোষকরা বাঙালি এ নেতার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে টালবাহানা শুরু করল।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বঙ্গবন্ধু
- শেখ মুজিবুর রহমান