পর্যটন খাতে প্রণোদনার ঋণে আবেদন করেনি কেউ
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন খাতের হোটেল, মোটেল এবং থিম পার্কের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে এক হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করে সরকার। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে এখান থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে তহবিল গঠনের দুই বছরে একটি আবেদনও জমা পড়েনি। গত জুনে এ তহবিলের মেয়াদও শেষ হয়েছে। মূলত এক বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ ও অন্য কোনো প্রণোদনা তহবিল থেকে ঋণ না নেওয়ার শর্ত থাকা এবং অনেকেই তহবিলের বিষয়টি জানতে না পারায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
করোনার সময় বিভিন্ন খাতের জন্য এক লাখ কোটি টাকার বেশি প্রণোদনার ঋণ ঘোষণা করে সরকার। এর মধ্যে হোটেল-মোটেলের বিপরীতে ঋণও ছিল। করোনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাতের অন্যতম ছিল পর্যটন। এ খাতের ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের ১৩ জুলাই এক হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এর দু’দিন পর সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করার কথা ছিল। এ ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ ছিল সরকারের ভর্তুকি। এর মানে ব্যাংক পাবে ৮ শতাংশ। ঋণ বিতরণ করতে গিয়ে কোনো ব্যাংক যেন অর্থ সংকটে না পড়ে, সে জন্য ৫০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কোনো ব্যাংক তহবিল পাওয়ার আবেদন করেনি।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার সমকালকে বলেন, কঠিন শর্তের কারণে এ ঋণ নিতে কেউ আগ্রহী হননি। বিশেষত এক বছরের মধ্যে ফেরত দেওয়া কারও পক্ষে সম্ভব না। তিনি বলেন, করোনার সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন খাত। বিশেষ করে হোটেল ও মোটেল পুরো বন্ধ ছিল। লকডাউন উঠে যাওয়ার পরও নানা বিধিনিষেধের কারণে অনেক দিন কোনো ব্যবসা হয়নি। সেই ক্ষতি ব্যবসায়ীরা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। হোটেল-মোটেলের ব্যবসা এখনও করোনার আগের অবস্থায় ফেরেনি। তিনি মনে করেন, সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে তহবিলটি নতুনভাবে সাজাতে পারে সরকার। ঋণ পরিশোধসহ অন্যান্য শর্ত শিথিল করলে কম সুদের এ ঋণ নিতে অনেকেই আগ্রহী হবেন।